বাংলাদেশ ফুটবল
কোনো চাপে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে কিছু বলেননি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্বে থাকা সাবেক তারকা ফুটবলার।
Published : 14 Sep 2024, 04:55 PM
কিছুদিন আগে কাজী সালাউদ্দিন বলেছিলেন, ‘হারি বা জিতি, নির্বাচন করব’, সেই অবস্থান থেকে হঠাৎই সরে এলেন তিনি। জানালেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আগামী অক্টোবরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না তিনি।
কোনো চাপে এই সিদ্ধান্ত কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে কিছু বলতে রাজি হননি বাফুফের বর্তমান সভাপতি।
গত ৫ অগাস্ট প্রবল গণ আন্দোলনে রাষ্ট্রক্ষমতার পালাবদলের পর পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে ক্রীড়াঙ্গণেও। বাফুফে সভাপতির পদ থেকে সালাউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিও হতে থাকে জোরাল। তবে, অগাস্টের মাঝামাঝি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেছিলেন, ‘হারি বা জিতি, নির্বাচন করব।”
মাঝের সময়েও সালাউদ্দিনের পদত্যাগের দাবি তুলতে থাকে সাবেক ফুটবলারদের অনেক। শনিবার তিনি হঠাৎ করে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে বার্তা দেন। সেখানেই বললেন, আগামী ২৬ অক্টোবরের নির্বাচনে লড়বে না তিনি।
“আপনারা জানেন যে, আমাদের বাফুফের নির্বাচন আগামী ২৬ অক্টোবর। এই নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে কিছু মানুষের চাওয়া ছিল, নির্বাচনটা যেন কিছুটা পেছায়, তো সেই অনুরোধ অনুযায়ী আমরা ফিফাকে চিঠি দিয়েছিলাম, ফিফা আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে যে, নির্বাচন কোনোভাবে একদিনও পেছানো যাবে না।”
“আমি আপনাদের সাথে বসেছি, আমার ব্যক্তিগত বিষয়ে, আমি চার মেয়াদে আপনাদের সাথে ছিলাম। এই সুযোগ যে আমার জীবনে এসেছে, এজন্য আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। ২৬ অক্টোবের যে নির্বাচন আসছে, সেখানে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না। এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এটা আপনাদের জানানোর জন্য এসেছি।”
সালাউদ্দিনের সময়ে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। বারবার গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার হতাশা পেরিয়ে গত আসরে সেমি-ফাইনাল খেলেছিল দল। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে দলের ব্যর্থতায় তাকেও সমালোচিত হতে হয়েছে সারাক্ষণ।
কিছুদিন আগে অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অবশ্য শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। এই তৃপ্তি নিয়ে বিদায়ের কথাও বললেন সালাউদ্দিন। মাঝের সময়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে নানা ইস্যুতে বাহাসের ঘটনাও মনে রাখতে চান না সাবেক এই তারকা ফুটবলার।
“আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ এই ১৬ বছর আমার সাথে কাজ করার জন্য। এই সময়ে অনেক বিষয়ে আন্ডারস্ট্যান্ডিং, মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে, এটা হতেই পারে, আমি মন থেকে সেটা ভুলে যেতে চাই, আশা করি, আপনারাও মনে কিছু রাখবেন না। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ, আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য।”
“আশা রাখি, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের যেন আরও উন্নতি হয়, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এবং ফুটবল যেন ভবিষ্যতে ভালোভাবে থাকে। অন্তত আমার একটা খুশি আছে যে, সবশেষ অনূর্ধ্ব-২০ দলকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হতে দেখতে পেরেছি আমি। ব্যক্তিগতভাবে এটা আমার জন্য ভালো অনুভূতির। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।”
কোনো চাপে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সালাউদ্দিন বলেন, কোনো সংশয় রাখতে চান না বলেই আগে-ভাগে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন তিনি।
“আমি আগেই এই ঘোষণা দিয়ে দিলাম যেন, কারো কোনো বিষয়ে কনফিউশন না থাকে। কারো কোনো…আপনারা দেখছেন…কারো কোনো সংশয় যেন না থাকে। আমি যা বলার, বলে দিয়েছি। আমি আপনাদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিব না। আমি আমার মতামতটা দিয়ে দিয়েছি যে, আমি কোনো নির্বাচন করব না। ধন্যবাদ।”
২০০৮ সালে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কোনো নির্বাচনেই হারেননি সালাউদ্দিন। সাম্প্রতিক সময়ে শারীরিক অসুস্থায় খুব একটা ফেডারেশনের না এলেও দায়িত্ব চালিয়ে গেছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই কিংবদন্তি খেলোয়াড়।