মালদ্বীপ ম্যাচে বেশি গোল না পাওয়ার আফসোস যেন শেষই হচ্ছে না মারিয়াদের।
Published : 08 Sep 2022, 07:29 PM
গ্রুপ সেরা হতে হলে স্রেফ জয়-ই যথেষ্ট নয়, মেলাতে হতে পারে গোলের হিসাবও। মালদ্বীপ ম্যাচে জয় ধরা দিলেও মেলেনি কাঙ্খিত গোলের হিসাব। বাংলাদেশ তাই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে তা মিলিয়ে নিতে উন্মুখ হয়ে আছে।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে আগামী শনিবার পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচ জিতলে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালের পথে অনেকটা এগিয়ে যাবে গোলাম রব্বানী ছোটনের দল।
‘এ’ গ্রুপে জয়ে শুরু পেয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে ৩-০ গোলে হারায় সাফের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত; মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়টিও ৩-০ ব্যবধানের। এ মুহূর্তে ভারত ও বাংলাদেশ পয়েন্ট ও গোল পার্থক্যে সমান।
গ্রুপের সেরা দল হয়ে সেমি-ফাইনালে উঠতে বাংলাদেশের লড়াইটা মূলত শক্তিশালী ভারতের সঙ্গে।
মালদ্বীপ ম্যাচে পাওয়া তিন গোলে তাই কিছুতেই তৃপ্ত হতে পারছে না বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে তাই গোল সংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্য দলের। কাঠমান্ডু শহরেই পাহাড়ের কোলঘেঁষা আর্মড পুলিশ ফোর্স মাঠে বৃহস্পতিবার হালকা প্রস্তুতি শেষে মারিয়া মান্দাও জানালেন পাকিস্তানের জালে গোল উৎসব করার আশাবাদ।
“প্রথম ম্যাচে আমরা বেশি গোল করতে পারিনি, পাকিস্তানের বিপক্ষে চেষ্টা করব আরও বেশি গোল দেওয়ার এবং ভালো খেলার। মালদ্বীপ ম্যাচে ভেজা মাঠের জন্য কোনো সমস্যা হয়নি, আমরা গোলের অনেক সুযোগ পেয়েছিলাম।”
“যেহেতু ওটা প্রথম ম্যাচ ছিল...তো একটু ভুল হতেই পারে। এ কারণে গোল হয়নি। আমরা সবাই সুস্থ আছি, ইনজুরি নেই। পরের ম্যাচে আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলব, এটা জিতলে আমাদের সেমি-ফাইনাল (অনেকটাই) নিশ্চিত হবে।”
আগের ম্যাচে মারিয়ার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঝমাঠের সুর বেঁধে দিয়েছিলেন মনিকা চাকমা। সাবিনা খাতুন-কৃষ্ণা রানী সরকারদের বলের যোগানও দিয়েছিলেন ঠিকঠাক, কিন্তু ফরোয়ার্ডরা পারেনি গোল উৎসব করতে। মনিকার মনে হচ্ছে, পাকিস্তানকে হারাতে হলে চেষ্টা ও নিবেদন আরও বাড়াতে হবে সবাইকে।
“মালদ্বীপের বিপক্ষে আমরা ৩-০ গোলে জিতেছি, কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও বেশি এফোর্ট দিতে হবে। মারিয়া ও আমার লক্ষ্য হচ্ছে মাঝমাঠ ধরে রাখা, ফরোয়ার্ডদের বল দেওয়া। আশা করি, পাকিস্তানের বিপক্ষেও আমরা সেটা করতে পারব।”
গত মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ২০১৪ সালের পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরে পাকিস্তানের মেয়েরা। তাদের দলে আছে যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা মারিয়া জামিল খান ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী নাদিয়া খান।
পাকিস্তানকে অবশ্য মোটেও হালকাভাবে নিচ্ছেন না মালদ্বীপ ম্যাচে এক গোল করা মাসুরা পারভীন। প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের উচ্চতা, দুই প্রবাসী খেলোয়াড়কে নিয়েও ভাবছেন ২৪ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার। তবে প্রত্যয়ী কণ্ঠে ঠিকই জানালেন সব বাঁধা পেরুনোর পথটা জানা আছে তাদের।
“পাকিস্তানেরও ভালো খেলোয়াড় আছে। শুনেছি ওদের দুজন খেলোয়াড় এসেছে দেশের বাইরে থেকে। পাকিস্তান মোটামুটি ভালো। তবে প্রতিপক্ষ যে-ই হোক না কেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলা। আমরা আমাদের খেলা দেখাব। বাংলাদেশের মেয়েরা এখন আর পিছিয়ে নেই। আমরা যতটুকু শিখেছি, তার শতভাগ দিয়ে সেটা খেলব।”
“মালদ্বীপের ১১ জনই পোস্টের সামনে ছিল, যখন আমরা উইং দিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি, তখন ওরা উচ্চতার কারণে হেডে ক্লিয়ার করতে পেরেছে। তখন আমরা ভেবেছি, ওরা কী করে সেটা আগে দেখব, তারপর ঠিক করব আমরা কী করব। এরপর থেকে আমরা গ্রাউন্ডে খেলার চেষ্টা করেছি। পাকিস্তানের বিপক্ষেও এমন পরিকল্পনা থাকবে। ওরা ভারতের বিপক্ষে একরকম খেলেছে, হয়ত আমাদের বিপক্ষে অন্যরকম খেলবে, ১৫-২০ মিনিট আগে ওদের দেখব, তারপর আমাদের যেভাবে খেলা দরকার, সেভাবে খেলব।”