উত্তরের হিমেল হাওয়ার দাপট আর ঘন কুয়াশা পঞ্চগড়ের মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে।
Published : 10 Jan 2023, 11:17 AM
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চলতি শীত মৌসুমে সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস মানে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।
তাদের হিসেবে, টানা কয়েকদিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর সোমবার ও মঙ্গলবার মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে।
তিনি বলেন,“হিমালয়ের বাতাস সরাসরি তেঁতুলিয়া হয়ে পঞ্চগড়ে প্রবেশ করায় রোদ উঠলেও তীব্রতা ছড়াতে পারছে না। এতে এই এলাকায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আগামী কয়েকদিন আবহাওয়া একই রকম থাকতে পারে।”
সপ্তাহ জুড়ে পঞ্চগড়ে জেঁকে বসা শীত, উত্তরের হিমেল হাওয়ার দাপট আর ঘন কুয়াশা মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি রাতেই বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। ঘন কুয়াশার দাপট থাকে অনেক বেলা পর্যন্ত।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার পর সূর্যের দেখা মিললেও হিমেল হাওয়ায় সূর্যের তাপ গায়ে লাগছে না। তীব্র শীতে হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে।
পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আগের তুলনায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এজন্য শিশু ওয়ার্ড ২০ বেডের ধারন ক্ষমতার প্রায় ৬০ জন বেশি রোগী রয়েছে, তাদের সঙ্গে আবার অভিভাবকরাও রয়েছেন। ”
নিরুপায় হয়ে কর্তৃপক্ষ বারান্দায় ও মেঝেতে কিছু রোগী থাকার ব্যবস্থা করেছে। এ সংখ্যাও প্রায় ৩০ জনের মত বলে তিনি জানান।
পঞ্চগড় শহরের ইসলামবাগ এলাকার আবেদ হোসেন (৫৮) বলেন, “তাপমাত্রার হিসাব ভাই আমরা অত বুঝিনা। গত কয়েকদিন ধরে বেশি শীত লাগছে, বাজারে লোকজন কমে গেছে। বেচাকেনা কম হচ্ছে; এজন্য আয় কমে সংসারে টান পড়েছে।”
করতোয়া নদী থেকে পাথর ও বালু তুলে জীবিকা নির্বাহ করেন মীরগড় এলাকার ৫৮ বছরের আফজাল মিয়া। তিনি বলেন, “তীব্র শীতে সকাল সকাল নদীতে নামা যায় না, নামলেও বেশিক্ষণ থাকা যায় না।”
তিন সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে কম আয়ের সংসার চালানো বেশ কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দুয়েকটা কম্বল পাইলে উপকার হইত। কিছু টাকাও বাঁচত, আরামও পাইতাম।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়ের শীতার্ত মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ৪০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিভিন্ন এলাকার শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।
এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও কম্বল বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।