‘টেকনাফে অপহৃত কৃষকদের নির্যাতন চালিয়ে আর্তনাদ শোনানো হচ্ছে স্বজনদের’

পুলিশ বলছে, প্রয়োজনীয় তথ্যও অপহৃত কৃষকদের স্বজনরা দিচ্ছেন না।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2023, 01:53 PM
Updated : 10 Jan 2023, 01:53 PM

কক্সবাজারের টেকনাফে অপহৃত কৃষকদের নির্যাতন চালিয়ে আর্তনাদ মোবাইল ফোনে স্বজনদের শুনানো হচ্ছে; মুক্তিপণ না দিলে দেওয়া হচ্ছে হত্যার হুমকি।

কৃষক পরিবারের সদস্যদের বরাতে মঙ্গলবার এমন তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী।

শনিবার রাতে হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকার ক্ষেত থেকে চার কৃষককে রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীরা অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পরিবারের। সোমবার তাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। 

অপহৃতরা হলেন, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আব্দু সালাম, ছৈয়দ হোসেন ওরফে গুরা মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান, রাজা মিয়ার ছেলে মুহিব উল্লাহ ও রাজা মিয়ার ছেলে আব্দুল হাকিম।

ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ বলেন, “অপহরণকারীরা যে চার জনকে ধরে নিয়ে গেছে তাদের মধ্যে একজনের কাছে মোবাইল ফোন রয়েছে। অপহৃতের মোবাইল ফোন থেকে স্বজনদের দফায় দফায় ফোন করা হচ্ছে।”

"অপহরণকারীরা মোট ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে। কৃষকদের চালানো হচ্ছে ব্যাপক নির্যাতন। নির্যাতনের আর্তনাদ শুনানো হচ্ছে স্বজনদের। ফলে অপহৃতদের পরিবারের মধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।”

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, “অপহরণকারী চক্রের নিরাপদ আস্তানা গহীন পাহাড়ে হলেও লোকালয়ের সব তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। পুলিশের অভিযান, সাংবাদিকদের ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের তথ্য তারা (অপহরণকারীরা) পাহাড়ে বসে পেয়ে যাচ্ছে। এতে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা ক্ষুব্ধ। স্বজনদের কাছে ফোনে এসব তৎপরতা থেকে বিরত থেকে দ্রুত মুক্তিপণের টাকা পরিশোধের কথা বলা হচ্ছে। না হয় অপহৃতদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।”

তবে মুক্তিপণের টাকা কোথায় পাঠাতে হবে, কীভাবে পাঠাতে হবে এসব এখনও জানানো হয়নি বলেও জানান চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, “পাহাড় ঘিরে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা মিলে শক্তিশালী অপহরণ চক্র রয়েছে। এরা কখনও পাহাড়ের পূর্ব পাশের হ্নীলা ইউনিয়নে, আবার কখনও পশ্চিম পাশের বাহারছড়া ইউনিয়নে অপহরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। সশস্ত্র অপরাধীরা প্রযুক্তিগতভাবেও শক্তিশালী।”

ঘটনার পর পুলিশের কিছু তৎপরতা দেখা গেলেও বর্তমানে কোনো তৎপরতা নেই বলেও অভিযোগ করেন রাশেদ মোহাম্মদ।

তিনি বলেন, “এই অবস্থায় স্বজনরা আতঙ্কিত। পাহাড় ঘিরে ধারাবাহিক অভিযান জরুরি।”

তবে চেয়ারম্যানের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টেকনাফ থানার ওসি মো. আব্দুল হালিম।

তিনি বলেন, “পাহাড় ঘিরে দফায় দফায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু অপহরণকারীরা ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করায় অপহৃতদের উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের আটক করা সম্ভব হচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন, “অপহৃত চার কৃষকের পরিবার এ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেয়নি। প্রয়োজনীয় তথ্যও স্বজনরা দিচ্ছেন না।”

গত চার মাসে টেকনাফে ৩১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন:

Also Read: ‘রোহিঙ্গাদের হাতে’ অপহৃত ৪ কৃষককে মুক্তি দিতে ‘২৫ লাখ টাকা পণ দাবি’

Also Read: আবার ৪ কৃষককে অপহরণের অভিযোগ ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে