মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ সিলেট নগরবাসী

সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে দুই মাসে সিলেট জেলায় ৮১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2022, 11:28 AM
Updated : 16 Nov 2022, 11:28 AM

মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ সিলেট নগরীর বাসিন্দারা দিনের বেলায়ও মশারি আর কয়েল ব্যবহার করছেন। ভোগান্তির পাশাপাশি বিভিন্ন মশাবাহিত রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ইতোমধ্যে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে সিলেট জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়।

এদিকে, এ বছর মশা নিধনে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম অন্য বছরের তুলনায় ধীর গতিতে বলে নগরের বাসিন্দা জানিয়েছেন।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুমন আহমেদ বলেন, “শীত পড়ার পর থেকে মশার আক্রমণ আরও বেড়েছে। আমরা বাসাতে দিনের বেলায় মশারি বা কয়েল ব্যবহার করছি। সব সময় ভয়ে থাকি বাসার ছোট বাচ্চাদের নিয়ে।”

বাগবাড়ি এলাকার সাগর তালুকদার জানান, মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ বাসার সবাই। বাসার বাইরে এক মিনিটও দাঁড়ানো যায় না মশার জন্য। গত বছর এমন সময় এত মশার উৎপাত ছিল না।

শিবগঞ্জ এলাকার মো. শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরেই মশার উৎপাত বেড়েছে। সকাল-সন্ধ্যা বলে কোনো কথা নেই। সব সময়ই মশার উপদ্রব লেগেই আছে।”

২ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী ইলিয়াস এলাকার মো. আবু তাহের বলেন, সিটি করপোরেশনের উচিত মশক নিধন কার্যক্রম ব্যাপকহারে চালানো। তারা যে ওষুধ প্রয়োগ করছে সেটি যেন সঠিক মানসম্পন্ন হয় তা নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

এদিকে, ১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার পর্যন্ত সিলেট জেলায় ৮১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সিলেট জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত জানিয়েছেন।

তবে আক্রান্তদের কারো মৃত্যু হয়নি উল্লেখ করে জম্মেজয় দত্ত বলেন, “গত ২৪ ঘণ্টায় একজন রোগী সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্ত সবাই ঢাকায় গিয়েছিলেন, সেখান থেকে আসার পর তাদের ডেঙ্গু ধরা পড়ে।”

মশা নিধন প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, গত দুই মাস আগ থেকে তাদের মশক নিধন কার্যক্রম হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা নগরের ১৭টি ওয়ার্ডে ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। বাকি ওয়ার্ডগুলোতে কাজ চলছে কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।

তবে এভাবে ওষুধ প্রয়োগ করে সুফল মিলছে না জানিয়ে তিনি বলেন, “একটানা নগরের ২৭টি ওর্য়াডে প্রতিদিন মশার ওষুধ ছিটানো হলে একটা সমাধান মিলবে। এছাড়া এক ওয়ার্ডে ওষুধ ছিটানোর পর সেই ওর্য়াডে আবার পরপর আরও চার বার ওষুধ ছিটানো গেলে মশার উপদ্রব কমে আসবে। তবে এই কাজ করার জন্য যে পরিমাণ লোকবল দরকার তা আমাদের নেই।”

সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার স্থায়ী কোনো বাসিন্দা এখনও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি। নগরীতে যে পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন তারা ঢাকা থেকে আসা পর্যটক ছিলেন বলে তার ভাষ্য।