কুড়িগ্রামে ‘অস্ত্রের মুখে দুই কিশোরকে যৌন নিপীড়ন’, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এক কিশোরের দাদা বাদী হয়ে জয়ন্তর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অস্ত্রের মুখে দুই কিশোরকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার কালিরহাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জয়ন্ত কুমার মোহন্ত (৩০) নামের এই ছাত্রলীগ নেতা ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং মধ্য পানিমাছ কুটি গ্রামের বাসিন্দা।

ফুলবাড়ী থানার ওসি ফজলুর রহমান বলেন, সোমবার বিকালে ভুক্তভোগী এক কিশোরের দাদা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জয়ন্ত কুমার মোহন্তর বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী থানায় মাদক ব্যবসা, চুরি ও মারামারির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও ফুলবাড়ি থানা পুলিশ জানিয়েছে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, রোববার দুপুরে উপজেলার মধ্য পানিমাছকুটি গ্রামে নিজ বাড়িতে জয়ন্ত দুই কিশোরকে কৌশলে ডেকে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধর্ষণ করেন। নির্যাতনের শিকার ওই দুই কিশোর বর্তমানে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মামলার বাদী বলেন, রোববার সকাল ১১টার দিকে জয়ন্ত তার নাতিকে ফোন করে তার চায়ের দোকানে ডাকেন। ফোন পেয়ে তার নাতি চার বন্ধু মিলে উপজেলা সদরে জয়ন্তের চায়ের দোকানে যায়।

“সেখানে চা-নাস্তা খাওয়ানোর পর জয়ন্ত তাদেরকে কৌশলে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিজ বাড়ির এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তিনজনকে বাড়ির পাশের মুদির দোকানে বসিয়ে রেখে গোপন পরামর্শের কথা বলে আমার নাতিকে নিয়ে বাড়িতে ঢোকে। বাড়ির ভিতরে গিয়ে জয়ন্ত আমার নাতির গলায় ছুরি ঠেকিয়ে এবং লাঠি দিয়ে মেরে বলাৎকার করে।”

তিনি আরও বলেন, “এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাশের রুমে তালাবদ্ধ করে রাখে। এদিকে অনেকক্ষণ সময় অতিবাহিত হলে দোকানে অপেক্ষমান আমার নাতির তিন বন্ধু জয়ন্তের বাড়ির দরজায় গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। তখন জয়ন্ত দরজা খুলে তিনজনের একজনকে শার্টের কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে বাড়ির ভিতর নিয়ে গিয়ে একইভাবে বলাৎকার করে। অপর দুইজন ভয়ে পালিয়ে যায়।”

মারধর ও বলাৎকারে অসুস্থ হয়ে পড়লে দুপুরে জয়ন্ত তাদেরকে ঘটনা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে একটি অটোরিকশায় উঠিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন বলে মামলার এই বাদী বলেন।

রাতে অসুস্থ দুই কিশোরকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় বলে তিনি জানান।

তবে জয়ন্ত কুমার মোহন্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাকে ষড়যন্ত্রমুলক ফাঁসানো হচ্ছে।”

ফুলবাড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌকির হাসান তমাল বলেন, “কারও ব্যক্তিগত অপরাধের দায় সংগঠন নেবে না। এ ঘটনায় তাকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”