মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ব্যবসায়ীকে ‘ক্রসফায়ারের ভয়’ দেখিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠার পর এক এএসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় এএসআই মো. সুমন সরকারকে গজারিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করার কথা জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল-মামুন।
এ ঘটনায় তদন্ত শুরুর কথা জানিয়ে মাহফুজুর রহমান আল-মামুন বলেন, চাঁদা দাবির সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাকিল ফরাজীর অভিযোগ, মধ্য বাউশিয়া বাসস্ট্যান্ডে ‘খাজা আজমেরী ভ্যারাইটিজ স্টোর’ নামে তার একটি দোকান রয়েছে।
“রোববার সন্ধ্যায় এএসআই সুমনের কাছে শুনি আমার নামে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি মাদক মামলা হয়েছে।
“তখন আমি এর প্রতিবাদ করে বলি- গত কয়েক মাসের মধ্যে আমি বন্দরে যাইনি। মামলার কাগজপত্র দেখতে চাইলে সুমন অপারগতা প্রকাশ করেন।”
শাকিল অভিযোগ করেন, পরে সোমবার সকাল ৯টার দিকে এএসআই সুমন তাকে দোকান থেকে একটি সাদা প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যান।
এ সময় গাড়িতে টি-শার্ট পরা এসআই পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি, কনস্টেবল পরিচয় দেওয়া একজন ও এক গাড়িচালক ছিলেন বলে জানান শাকিল ফরাজী।
তিনি বলেন, চালক গাড়িটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চর বাউশিয়া এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে যান। পরে পিস্তল ঠেকিয়ে তার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন এএসআই সুমন। দাবিকৃত টাকা না দিলে মাদক মামলার আসামি হিসেবে তাকে ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার হুমকি দেন সুমন।
“এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করে হ্যান্ডকাপ পরানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে লোকজন জড়ো হলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আমাকে ছেড়ে দেয়।”
শাকিলের মা রোকসানা বেগম বলেন, মাইক্রোবাসে করে পুলিশ শাকিলকে তুলে নেওয়ার খবর পেয়ে তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
“পরে জানতে পারি জঙ্গলের ভেতরে শাকিলকে আটকে রাখা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পুলিশের হাত থেকে শাকিলকে উদ্ধার করা হয়।”
এ বিষয়ে এএসআই সুমন বলেন, তার এক বন্ধু নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় কর্মরত। সেখানে শাকিলের নামে একটি মাদক মামলা হয়েছে। সেই বন্ধু গজারিয়া থানায় এলে বিষয়টি নিয়ে নিড়িবিলি কথা বলার জন্য শাকিলকে ওই বাগানে নিয়ে যান তারা।
বিষয়টি নিয়ে এরইমধ্যে তদন্ত শুরু হওয়ার কথা জানিয়েছেন গজারিয়া থানার ওসি মোল্লা সোয়েব আলী।