চর ভগবতিপুরের একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিকটিও ব্রহ্মপুত্রে বিলীন

এর আগে ওই এলাকার একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও ভাঙনের শিকার হয় বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2023, 09:55 AM
Updated : 31 May 2023, 09:55 AM

কুড়িগ্রামে সদর উপজেলার দুর্গম ভগবতিপুর চরের মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা ছিল সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকটি। সেটিও গিলে খেয়েছে আগ্রাসী ব্রহ্মপুত্র।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতিপুর সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকটি ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে বিলীন হয় বলে জানিয়েছেন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর।

উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে নদ-নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে বন্যার আগেই জেলার ১৬টি নদীর তীরেদেখা দিয়েছে ভাঙন। নদীভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সরকারি-বেসরকারি বহু স্থাপনার শেষ রক্ষা হচ্ছে না।

চেয়ারম্যান গফুর জানান, এর আগে ওই এলাকার চরভগবতীপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও ভাঙনের শিকার হয়। এ ছাড়াও হুমকির মুখে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে একটি মসজিদ ও একটি আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের।

“এবার চর ভগবতিপুর এলাকার একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিকটি বিলীন হওয়ায় চরাঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হল।”

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, কিছুদিন থেকে হঠাৎ পানি বাড়ায় ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও ধরলাসহ নদী তীরবর্তী বসতভিটা ও ফসলি জমি নিয়ে আতঙ্কে দিন পারছেন বাসিন্দারা।

চর ভগবতিপুর এলাকার নজরুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমান বলেন, পানি বৃদ্ধির কারণে কিছুদিন থেকে তাদের এখানে ভাঙন চলছিল। অনেকের বাড়ি ঘর নদীতে চলে গেছে। এবার একটা মাত্র সরকারি ক্লিনিক ছিল তাও নদীতে গেল।

Also Read: কুড়িগ্রামে নদীতে বাড়ছে পানি, ভাঙন হুমকিতে কমিউনিটি ক্লিনিক

এর আগে চরভগবতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি রাশেদুল ইসলাম বলেছিলেন, ক্লিনিকটির স্থাপনা নিলামে তোলা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি শিডিউল অনুযায়ী মূল্য না ওঠায় বিক্রি করা হয় নাই। তবে ক্লিনিকের ভিতরের সব আসবাবপত্র ও ওষুধ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক চেষ্টা করেও ক্লিনিকটি রক্ষা করা গেলো না। পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসকে বলে প্রায় ৪ হাজার জিও ব্যাগ সেখানে ফেলানো হয়েছিল।

“এতোদিন নিয়ন্ত্রণও ছিল, হঠাৎ করে ভেঙে গেছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডও অনেক চেষ্টা করেছে। আবার কবে ক্লিনিক স্থাপন করা হবে জানি না। তবে অস্থায়ীভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম চালু থাকবে।”

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভগবতীপুরে চরের ভাঙন রোধে প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে; বরাদ্দ আসলেই কাজ শুরু হবে।