কুড়িগ্রামে টানা বর্ষণে নদী ভাঙন, শতাধিক বিঘা জমি বিলীন

ভাঙনে ২৯টি বসতভিটাসহ শতাধিক বিঘা আবাদি জমি বিলীন হয়েছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2024, 05:35 AM
Updated : 28 March 2024, 05:35 AM

কুড়িগ্রামে এক সপ্তাহের ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। 

ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার ভাঙনে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২৯টি বসতভিটাসহ শতাধিক বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। 

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙা ইউনিয়ন, উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের খুদিরকুটি ব্যাপারীপাড়া ও সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর সিতাইঝাড় গ্রামে দুদিনে ধরলার তীব্র ভাঙনে বিঘার পর বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। 

হুমকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভূমি কার্যালয়সহ বসতি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বসতভিটা হারিয়ে দিশেহারা পড়েছেন শতাধিক মানুষ। 

সিতাই ঝাড় গ্রামের ভিটেমাটি হারা জোবেদ আলী বলেন, “রাতে আমার বাড়িঘর নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে। হঠাৎ ভাঙন শুরু হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আর জমিজমা না থাকায় কোথায় ঠাঁই নেব জানি না। আপাতত পরিবার-পরিজন নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছি। আল্লাহ জানে কপালে কী আছে।” 

ওই এলাকার আরেক দিনমজুর সামেদ আলী বলেন, “চারটা ঘরের চাল সরে নিয়া স্কুল মাঠত থুচি। ভিটার অর্ধেক গেইছে। যে স্রোত পড়ছে নগদ বাকি কোণাও যায়! একজনের কাছত ঘর তুলি থাকার জন্য জমি চাছি, না দিলে কোটেই থাকমো সে উপায় নাই।” 

বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, “কয়েকদিন ধরে ভাঙন চলছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্কুল সংলগ্ন ২৯টি পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা বেড়েই চলছে। কিন্তু পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” 

তবে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তাৎক্ষণিক দুই হাজার বস্তা জিও ব্যাগ ফেলার অনুমতি দিয়েছে। সকাল থেকে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “রাজারহাট ঘড়িয়াল ডাঙা ইউনিয়ন, উলিপুর বেগমগঞ্জ ও সদর উপজেলার মোগলাবাসা ধরলার বাম তীরে প্রায় তিন কিলোমিটার অংশ জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

“এতো বড় অংশে জরুরি প্রতিরক্ষা কাজ করার বরাদ্দ নেই। আমরা তাৎক্ষণিক দুই-তিন হাজার জিও ব্যাগ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছি।”

স্কুল, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ স্থাপনাগুলো রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

[প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক]