ফলে পদ্মা সেতু এবং বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মুন্সীগঞ্জ শহরে পৌঁছতে পথ বেড়ে গেল।
Published : 13 May 2023, 10:46 PM
মেরামতের জন্য মুন্সীগঞ্জের কুণ্ডেরবাজার সেতুটি ১ মাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১৬ মে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। ১৬ জুন রাত ৮টা থেকে আবার স্বাভাবিক যান চলাচল শুরু হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, মুন্সীগঞ্জ (হাতিমারা) কুণ্ডেরবাজার-শ্রীনগর (ছনবাড়ি) সড়কে কুণ্ডেরবাজার বেইলি ব্রিজটি জরুরি মেরামত কাজ দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করতেই বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তাই যানবাহনগুলোকে বিকল্প সড়ক ফতুল্লা-মুন্সীগঞ্জ-মাওয়া দিয়ে চলাচল করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কুণ্ডেরবাজার সেতুর মুন্সীগঞ্জ প্রান্ত থেকে আগে বেতকা চৌরাস্তা, আব্দুল্লাহপুর চৌরাস্তা এবং হাতিমারা মোড় থেকে বালিগাঁও-লৌহজং-মাওয়া সড়কে যুক্ত হওয়া সম্ভব। তবে অনেকটা পথ ঘুরতে হবে। তাই পদ্মা সেতু এবং বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মুন্সীগঞ্জ শহরে পৌঁছতে পথ বেড়ে গেল।
গত বছরের ২০ জুলাই বালুর জাহাজের ধাক্কায় মাঝখানের খুঁটির পিয়ারক্যাপ ও গার্ডার ফেটে যাওয়ার পর সেতুটি ৩০ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। আবার জোড়াতালি দিয়ে চালু করলেও ছিল লক্করঝক্কর। এতে বিড়ম্বনায় পড়ে সেতু ব্যবহারকারীরা।
সড়ক ও জনপথের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ফাহিম রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সত্ত্বেও সচল অবস্থায় সেতুটিতে প্রতিদিন দুই সহস্রাধিক যান চলাচল করে।
কুন্ডেরবাজার বেইলি ব্রিজ বন্ধে মুন্সীগঞ্জ-সিরাজদিখান-শ্রীনগর রুটে সরাসরি যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যাবে।
এতে নানা ভোগান্তিতে পড়বে এ এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
প্রায় ২৩ বছর আগে চালু হওয়া ৯৮ মিটার দীর্ঘ সেতুটি এই অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগে বড় পরিবর্তন আনে।
তৎকালীন সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য অধ্যাপক সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির প্রচেষ্টায় এই গুরুত্বপূর্ণ সেতু চালুর পর বদলে যায় এই এলাকার দৃশ্যপট। মুন্সীগঞ্জ সদর ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সাথে সিরাজদিখান, শ্রীনগর এবং লৌহজং উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হয়।
তাই আলু ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতসহ স্থানীয় অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও এখানে পাকা প্রশস্ত সেতু হয়নি।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি ও সিরাজদিখান উপজেলার বন্ধন তৈরি করা সেতুটি ঢাকা-মাওয়া বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের ছনবাড়ি পয়েন্ট, জেলা শহর মুন্সীগঞ্জের সঙ্গে সংযোগ করেছে। এখানে দীর্ঘ দিনেও কংক্রিটের প্রশস্ত সেতু না করায় দুই পারে যানজট লেগেই থাকে। আর সেতুটি প্রায়ই বিকল হচ্ছিল।
সবশেষ মেরামতের পর গেল বছরের ৩১ জুলাই থেকে বেইলি ব্রিজটি দিয়ে শুধু ছোট যানবাহন চলাচল করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ব্রিজের দুপাশে স্টিলের বার স্থাপন করে দেওয়ায় বাস-ট্রাক এমনকি পিকআপও চলতে পারেনি।
সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবুল কাশেম মোহাম্মদ নাহীন রেজা জানান, এই সেতুর মাপে একটি বেইলি ব্রিজ চট্টগ্রামের কারখানায় নির্মাণ করা হচ্ছে, সেটির খণ্ড খণ্ড অংশ নিয়ে আসার পর এখানে স্থাপন হবে। নতুনভাবে স্থাপন করা বেইলি দিয়ে বাসও চলাচল করতে পারবে।
তিনি আরও জানান, পদ্মা ও ধলেশ্বরী নদীর সংযোগে খরস্রোতা তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের ওপর নির্মিত এই সেতুটি ১০০ মিটারের বেশি দীর্ঘ করতে হবে। তাই ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং থেকে অনুমোদন নিতে হয়েছে, নকশার কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে এখন, চলছে টেন্ডার প্রক্রিয়াও।
আপদকালীন সময়ের জন্য বেইলি সেতুটি স্থাপন করা হবে। টেন্ডার শেষে সেতু এলাকায় পাকা ব্রিজ নির্মাণের সময়ও প্রতিস্থাপন করা এই বেইলিটিই বিকল্প সেতু হিসেবে ব্যবহার হবে। তাই পাকা সেতু নির্মাণের সময় আর বেইলি ব্রিজটি বন্ধ হবে না। দুর্ঘটনা এড়াতে ভারি যান চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে, তবে বিকল্প এই সেতু দিয়ে বাস-ট্রাক চলাচল করতে পারবে।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রামের কারখানায় এই বেইলির বিভিন্ন অংশ তৈরি হচ্ছে। সেগুলো আগামী সোমবার রাতে সেতুস্থলে পৌঁছবে। পরদিন মঙ্গলবার সকাল থেকে সংযোজনের কাজ শুরু হবে।