লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন ।
বুধবার সন্ধ্যায় চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ।
সদর থানা আওয়ামী সভাপতি লীগের সভাপতি আবুল কাশেম জানান, গত ৩ মার্চ চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। এই প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক করা হয় কামাল হোসেনকে।
স্থানীদের বরাতে পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় এই কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আফজাল রোডের মুখে একটি আনন্দ মিছিল বের করে আহ্বায়ক কামাল হোসেন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন পক্ষের লোকজন।
এর আগে এই প্রস্তুতি কমিটিকে প্রত্যাখান করে বাজারের নিউমার্কেটের সামনে প্রতিবাদ সভা ও মিছিল করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও কাজী সোলাইমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম লিটনের পক্ষের লোকজন।
এর জের ধরে সন্ধ্যায় দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
এ সময় পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবদুর রহিম, জাকির হোসেন ও কনস্টেবল মোজাম্মেল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা শিপন খলিফা, ছাত্রলীগ নেতা এম সজিব, রাসেল হোসেন, রাজু আহেমদ, সুমন হোসেন ও রাজিব হোসেনসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, আহত তিন পুলিশসহ পাঁচ জনকে সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় পুলিশ শিপন খলিফা, ইব্রাহিম খলিল, এম সজিব, রিয়াজ হোসেন ও ইদ্রিস হোসেনসহ ১৫ জনকে আটক করেছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
এ বিষয়ে কাজী সোলাইমান ও লিটন এখনো নিজেদের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদক দাবি করে বলেন, “কমিটি বাতিল না করে গোপনে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।
এই কমিটি কোনো নেতা-কর্মী মেনে নেয়নি এবং নিবেও না। এর প্রতিবাদে নেতা-কর্মীরা বুধবার বিক্ষোভ মিছিল করেন। চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ও কামাল হোসেন পরিকল্পিতভাবে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে।
অপরদিকে প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কামাল হোসেন বলেন, “বিনা উস্কানিতে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আনন্দ মিছিলে কাজী সোলাইমান ও লিটনের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়েছে।”
পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ আইন-শৃংখলা অবনতির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।