নরসিংদীতে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০, ভাঙচুর

‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে’ লাগা এ সংঘর্ষ আশপাশের তিনটি গ্রামে ছড়ায় বলে জানায় পুলিশ।

নরসিংদী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2024, 11:43 AM
Updated : 13 March 2024, 11:43 AM

‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে’ নরসিংদী সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে; এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে।

বুধবার সকালে উপজেলার চরাঞ্চলের আলোকবালী ইউনিয়নের বাখরনগর, মুরাদনগর ও বকশালীপুর গ্রামে একযোগে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান নরসিংদী সদর থানার ওসি তানভীর আহমেদ।

আহতদের নরসিংদী সদর ও জেলা হাসপাতালসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আহতরা হলেন- মনির উদ্দিন (৫৩), বজলুর রহমান (৪৫), আব্দুর রহমান (২২), মাহফুজ (২০), শীতল মিয়া (৫০), খোকা মিয়া (৬৫), সজিব (২৫), মুরাদ মিয়া (২২), আল মাসুদ (১৮) ও ওবায়দুল (২৬)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদউল্লাহর পক্ষের লোকজনের সঙ্গে আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দীপু বিরোধ চলে আসছিল।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নজরুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুজ্জামানের পক্ষে-বিপক্ষে কাজ করা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ আরও বেড়ে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।

কিছুদিন আগে নৌকার সমর্থক দীপুর লোকজন আসাদউল্লাহর পক্ষের ১৫-২০ জনকে এলাকা ছাড়া করেন। বুধবার সকালে আসাদউল্লাহর সমর্থকরা গ্রামে ফিরে এলে দুপক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ বাধে। এ সময় তিন গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। এ সময় বেশকিছু বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদউল্লাহ বলেন, “ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নিয়ে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে ছয়জনকে গুলি করে আহত করেছে।

“সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুজ্জামানের নির্বাচন করেছিলাম। নির্বাচনের দিন থেকে ২০ জন কর্মীকে গ্রাম ছাড়া করেছে তারা। এখনো ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে হামলা করে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের এলাকা ছাড়া করছে।”

দেলোয়ার হোসেন দীপুর পক্ষের নেতা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোমেন মিয়া বলেন, “আসাদউল্লাহ তার আইন পেশাকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানি করে আসছেন। গত সপ্তাহে আমার নামে অপহরণের মিথ্যা মামলা দিয়েছেন।

“তার মামলা ও অত্যাচার থেকে বাঁচতে সাধারণ লোকজন তাদের প্রতিহত করে এলাকা থেকে বের করে দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে।”

ওসি তানভীর আহমেদ বলেন, বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।