ভোলায় মেঘনা নদীতে জ্বালানি তেল নিয়ে ডুবে যাওয়া জাহাজ সাগর নন্দিনী-২ চতুর্থ দিনেও উদ্ধার করা যায়নি।
ঘন কুয়াশা ও প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ ধীরে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে সাগর নন্দিনী-২ রোববার ভোরে মেঘনার তোলাতুলির কাঠিরমাথা এলাকায় বালুবাহী একটি নৌযানের সঙ্গে সংঘর্ষে তলা ফেটে জাহাজটি ডুবে যায়।
বৃহস্পতিবার রাতে পদ্মা অয়েল কোম্পানীর উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ও তদন্ত কমিটির প্রধান আসিফ মালিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘন কুয়াশা ও প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ ধীরে হচ্ছে।
তবে উদ্ধার কাজের অনেক অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুক্রবারের মধ্যে জাহাজটি পানির উপরে উঠানো যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাহাজটি উদ্ধারে মালিক পক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ ও কোস্ট গার্ডের ডুবুরিরা কাজ করছেন বলে আসিফ মালিক জানান।
ঘটনাস্থলে থাকা বিআইডব্লিউটিএ-এর যুগ্ম পরিচালক মো. সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ডুবে যাওয়া জাহাজের তলদেশ দিয়ে অয়্যারিং রোপ (লোহার রশি) নেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। সেই রোপ দুইটি বার্জারের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। আরও একটু কাজ বাকি আছে। সেটি সম্পন্ন হলে জাহাজ টেনে পানির উপরে ভাসানোর চেষ্টা করা হবে।
শুক্রবারের মধ্যে না হলেও শনিবারের মধ্যে ভালো খবর দেওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
একই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা কেএম শাফিউল কিঞ্জল।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘন কুয়াশা ও প্রবল স্রোতের কারণে ডুবুরিরা কাজ করতে পারছেন না। জোয়ারভাটার মাঝামাঝি সময়ে স্রোতের প্রাবল্য কম থাকে। সেই সময়ে ডুবুরিরা কাজ করেন। তাই উদ্ধার কাজে দেরি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে তেল তেমন বের হচ্ছে না। যতটুকু বের হয়, কোস্ট গার্ডের বোটের সাহায্যে তেল অপসারণ করা হচ্ছে।
শনিবার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জ্বালানি তেল নিয়ে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজটি চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। চাঁদপুরে সেটি পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিপোতে যাওয়ার কথা ছিল।
রোববার ভোরে ঘন কুয়াশার মধ্যে তোলাতুলির কাঠিরমাথা এলাকায় বালুবাহী একটি নৌযানের সঙ্গে জাহাজটির সংঘর্ষ হয়। এতে তলা ফেটে জাহাজটিতে পানি ঢুকতে থাকে এবং এক পর্যায়ে ডুবে যায়।
জাহাজে মোট ১৩ জন কর্মী ছিলেন। ওই সময় তাদের চিৎকার শুনে অন্য একটি নৌযান এসে তাদের উদ্ধার করে।
ডুবে যাওয়া জাহাজের কর্মীরা জানান, স্থানীয় জেলেরা এসে জাহাজের তেল সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। কিছু তেল মেঘনায় ছড়িয়েও পড়ে।
জাহাজটির তেলের মালিক পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাহাজে ১১ লাখ লিটার ডিজেল ও অকটেন ছিল। এর মধ্যে ডিজেল আট লাখ ৯৮ হাজার লিটার এবং অকটেন দুই লাখ ৩৪ হাজার লিটার ছিল। এই জ্বালানি তেলের বাজারমূল্য নয় কোটি টাকার বেশি।