সারাদেশের মোট ফুলের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ এখান থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
Published : 31 Jan 2024, 07:52 PM
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় বসেছে ফুল উৎসব। চারদিকে ফুলের ক্ষেত আর তার মাঝে চলা এ উৎসবের রঙ লেগেছে সবার মনে।
বুধবার বিকেলে উপজেলার গদখালী ও পানিসারা ইউনিয়নে হাড়িয়াদহে চারদিনের এ উৎসবের উদ্বোধন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন।
বৈচিত্র্যময় এই ফুলের রাজ্যকে দেশ এবং বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো ফুল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
গদখালি গোটা ইউনিয়ন জুড়ে বিস্তীর্ণ মাঠে এখন দোল খাচ্ছে জারবেরা, গোলাপ, গ্লাডিওলাস, রজনিগন্ধা, হলুদ গাঁদা ও চন্দ্র মল্লিকাসহ প্রায় ১১ ধরনের ফুল। বাতাসে ফুটন্ত ফুলের সুবাস ছড়িয়ে যাচ্ছে চারিদিকে।
ফুল উৎসব ঘিরে ভালো বেচা-কেনা হবে এমনটাই প্রত্যাশা করছে এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা মেলা প্রাঙ্গণে প্রত্যেক চাষিই এক বা একাধিক ফুলের স্টল সাজিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, এ বছর উপজেলার ৬৩০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে গোলাপের চাষ সব থেকে বেশি হয়েছে। প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ হেক্টর জমিতে নানা রঙের গোলাপের চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, “দেশ এবং বিশ্বের কাছে এই ফুল সেক্টরকে তুলে ধরতে আমাদের এই উৎসবের আয়োজন করা। কৃষকরা যাতে ভালো দাম পায় এবং এই ফুল কী ভাবে বিদেশে রপ্তানি করা যায় সে বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
“সারাবছরের মধ্যে এই শীত মৌসুমকে ঘিরে বড় ধরনের বাজার ধরার চেষ্টা করে কৃষকেরা। তারই ধারাবাহিকতায় ফুল উৎসবকে ঘিরে এই গদখালি থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে বলে ধারণা করছি।”
তিনি বলেন, সারা দেশের মোট ফুলের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ এখান থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
গদখালির পানিসারা গ্রামের ফুলচাষি ইসমাইল হোসেন ফুল মেলায় স্টল দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “ফুল উৎসব মানে আমাদের উৎসব এবং গোটা যশোরবাসীর উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে আমরা ভালো বেচাকেনার আশা করছি। আজ থেকে মেলায় ফুল তুলে বিক্রির পালা।”
ইসমাইল হোসেন বলেন, “প্রতিবছর সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি থাকে, সেটি হলো প্লাস্টিকের ফুলের ব্যবহার এবং আমদানি বন্ধ করা। এ বছরও আমাদের একই দাবি রয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, “যশোরের ঐতিহ্য এবং এই ফুলের রাজধানীকে সবার সামনে উৎসবের মাধ্যমে তুলে ধরা আমাদের মূল লক্ষ্য।”
তিনি বলেন, এবার ফুল উৎসবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৬টি স্টল দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও পানিসারা ফুল মোড় এলাকার বিভিন্ন দোকানে ফুলের মেলা বসবে।