সিরাজগঞ্জে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ

ঋতু পরিবর্তনের কারণে নানা রোগ বালাই হয়ে থাকে; তার মধ্যে একটি হচ্ছে চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Sept 2022, 04:43 PM
Updated : 27 Sept 2022, 04:43 PM

সিরাজগঞ্জ জেলাজুড়ে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে।

সাধারণ গ্রীষ্মে এ রোগ দেখা দিলেও এবার শরতেই প্রকোপ বেড়েছে।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল ও ডা. এম এ মতিন বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন গড়ে ২-৩ শত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ রোগের ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে সন্দেহে ইতোমধ্যে ডা. এম এ মতিন বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের অপারেশন কক্ষটি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ডা. এম এ মতিন মেমোরিয়াল বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাতাসের সঙ্গে এই ভাইরাস বেশি ছড়ায় বলে একজন থেকে আরেকজন সহজেই আক্রান্ত হচ্ছেন।

এ জন্য রোগীকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, বাইরে গেলে কালো চশমা পরা, পরিষ্কার টিস্যু বা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চোখ পরিষ্কার করাসহ আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন তিনি।

এ ছাড়াও যারা ইতোমধ্যে চোখ অপারেশন করেছেন তাদের অবশ্যই এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।

ডা. এম এ মতিন মেমোরিয়াল বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের ব্যবস্থাপক এস এম কবির উদ্দিন জানান, ইতোমধ্যে তাদের হাসপাতালের অপারেশন কক্ষটি ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে সন্দেহে গত রোববার থেকে তারা হাসপাতালে সকল প্রকার অপারেশন বন্ধ রেখেছেন। অপারেশন রোগী ভর্তিও বন্ধ রেখেছেন।

চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুল হক বলেন, ভাইরাসটি করোনাভাইরাসের মতো উচ্চমাত্রার সংক্রামক। এটি প্রতিষেধকের কোনো ব্যবস্থা নেই। আক্রান্ত রোগী থেকে দূরে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলায় ব্যাপক হারে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ক্ষেত্রভেদে এ রোগের কারণে চোখের মনি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগীকে এন্টিবায়োটিক এবং এন্টিভাইরাল দিতে হবে।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ফরিদ উদ্দিন জানান, চোখ ওঠার সমস্যাটি ঋতু পরিবর্তনের সময় হয়ে থাকে। তবে এ বছর এ রোগে আক্রান্ত রোগী প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে।

“গত এক সপ্তাহে হাজারের অধিক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এটি পুরোপুরি ছোঁয়াচে রোগ। এ থেকে বাঁচতে হলে কালো চশমা ব্যবহারের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শে চলতে হবে।”

সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. রামপদ রায় বলেন, “চোখ ওঠা রোগী থেকে দূরে থাকতে এবং চোখ উঠলে কী কী করণীয় সে বিষয়ে প্রত্যেকটি হাসপাতালে করণীয় সর্ম্পকে নির্দেশনা দিয়েছি এবং লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে নানা রোগ বালাই হয়ে থাকে; তার মধ্যে একটি হচ্ছে চোখ ওঠা। এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ।

কনজাংটিভাইটিস বা চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোখ ওঠা বলে। এতে রোগীর হাত বা ব্যবহৃত জিনিসপত্রের সংস্পর্শে আশেপাশের লোকজনকে আক্রান্ত করতে পারে।

আরও পড়ুন:

Also Read: ‘চোখ উঠলে’ বিদেশ ভ্রমণ না করার অনুরোধ