এই মেলার আয়োজক হিসেবে থাকছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
Published : 18 Jan 2024, 03:56 PM
পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পাখি মেলা-২০২৪।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তন প্রাঙ্গণে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান।
২৩তম বারে এই মেলার আয়োজক হিসেবে থাকছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
সহ-আয়োজক হিসেবে থাকবে ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব, আরণ্যক ফাউন্ডেশন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতি, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এবং বাংলাদেশ বন বিভাগ।
এ বিষয়ে অধ্যাপক কামরুল বলেন, এ বছর মেলায় বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা থাকবে। তার মধ্যে- আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতা, পাখি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু-কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, টেলিস্কোপ ও বাইনোকুলারস দিয়ে শিশু-কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ, পাখি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি চেনা প্রতিযোগিতা এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত পাখি বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা।
এ ছাড়া বিগ বার্ড বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড, সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড, কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ও স্পেশাল রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের নিয়মাবলি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুটি দল অংশগ্রহণ করতে পারবে। প্রতিটি দলে চারজন শিক্ষার্থী থাকবে এবং দলের সঙ্গে একজন বিচারক অংশগ্রহণ করবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্ধারিত এক ঘণ্টা হেঁটে পাখি দেখে বা পাখির ডাক শুনে সঠিক নাম লিখতে হবে। অংশগ্রহণকারীদের নাম মেলার পূর্বে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে অথবা মেলার দিন প্রতিযোগিতা শুরুর আগে জহির রায়হান মিলনায়তন প্রাঙ্গণে সকাল ৭টা ২৫মিনিটের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে।
শিশু-কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে।
দুটি গ্রুপ থাকবে, ‘ক’ গ্রুপ: নার্সারি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ‘খ’ গ্রুপ: তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি।
প্রতিযোগীদের মেলার দিন সকাল ৮টা ৩০মিনিটের মধ্যে নাম নিবন্ধন করতে হবে এবং প্রত্যেকের নিজ নিজ স্কুলের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগরে পাখি এবার শুধু নীরব লেকটিতেই
পাখি বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীসহ সকলে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি চেনা প্রতিযোগিতায় (অডিও-ভিডিও) ভিডিও দেখে ও ডাক শুনে পাখির নাম বলতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুটি দল অংশগ্রহণ করতে পারবে। প্রতিটি দলে দুইজন শিক্ষার্থী থাকবে। মেলার দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে নাম নিবন্ধন করতে হবে।
এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়সীমা অর্থাৎ ১০ জানুয়ারির মধ্যে যারা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিয়েছে তাদের মধ্য থেকে বিগ বার্ড বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ডের জন্য তিন জন, কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের জন্য তিন জন, সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ডের জন্য এক জন এবং স্পেশাল রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ডের জন্য ব্যক্তি বা সংগঠনকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আয়োজক কমিটির সদস্য প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, এ বছর সারা দেশেই পাখি কম এসেছে সে জন্য জাহাঙ্গীরনগরেও পাখির সংখ্যা কম। তবে বর্তমানে ক্যাম্পাসে পাখিদের থাকার পরিবেশও কিছুটা সংকুচিত হয়েছে, যেটা পাখি কমার আরেকটা কারণ।
তিনি আরও বলেন, এই মেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে পাখি সংরক্ষণের জন্য গণসচেতনতা তৈরি করা। এই সচেতনতা শুধু ক্যাম্পাস না, সারা দেশেই ছড়িয়ে দিতে চাই।
২০০০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম পাখি মেলা শুরু করেছিল ‘বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব'। ২০০৪ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সরাসরি সম্পৃক্ত হয়। এর মধ্যে ২০১১ সাল এবং ২০২১ সালে পাখি মেলা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এ বছর ২২তম পাখি মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলো লিজ দেওয়ার কারণে পাখি বসেনি, যার ফলে সে বছর মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি এবং ২০২১ সালে কোভিডের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।