দুই মাস পর সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণ শুরু

নিষিদ্ধ সময়ে যেসব কাঁকড়া জব্দ করা হয়েছিল, সেগুলো নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছে।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2024, 11:35 AM
Updated : 1 March 2024, 11:35 AM

সুন্দরবনে দুই মাস কাঁকড়া আহরণ বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে। প্রজনন মৌসুম হওয়ায় পহেলা জানুয়ারি থেকে জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশ করে কাঁকড়া ধরার নিষেধাজ্ঞা দেয় বন বিভাগ।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, বন বিভাগ থেকে অনুমতিপত্র পেয়ে উপকূলের জেলেরা শুক্রবার সকাল থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে নৌকা নিয়ে নেমেছেন কাঁকড়া ধরতে।

মিহির বলছেন, কাঁকড়া বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রজনন মৌসুমে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাস সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে জেলেদের কাঁকড়া আহরণ নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৯৮ সালে কাঁকড়া রপ্তানি নীতিমালা প্রণয়নের পর থেকেই প্রতিবছর এ দুই মাস কাঁকড়া ধরার পাস-পারমিট বন্ধ রাখা হয়।

“এ নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এখন বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে জেলেরা প্রবেশ নিষিদ্ধ অভয়াশ্রম ছাড়া অন্য নদী-খালে কাঁকড়া আহরণ করতে পারবেন।”

তবে কেউ যাতে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার অনুমতি নিয়ে বেআইনি কর্মকাণ্ড করতে না পারে, সে জন্য বনরক্ষীদের টহল ও অন্য কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বন সংরক্ষক জানান।

তিনি বলেন, সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণের নিষিদ্ধ সময়ে যেসব কাঁকড়া ধরার নৌকা এবং কাঁকড়া জব্দ করা হয়েছিল, সেগুলো নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছে।

বন বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার। যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ শতাংশ। জলভাগে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদ-নদী ও খাল আছে।

এ সব খালে বিশ্বখ্যাত শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে।

তবে বন বিভাগ যে উদ্দেশ্যে দুই মাসের কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তা সফল হয়নি বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুন্দরবন সংলগ্ন কয়েকজন জেলে দাবি করেছেন।

তারা বলছেন, প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়া শিকার নিষিদ্ধ হলেও তা উপেক্ষা করে একশ্রেণির অসাধু জেলে মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে ঢুকে ডিমওয়ালা মা কাঁকড়া শিকার করছেন। বিদেশে রপ্তানি করা কাঁকড়ার ৯৯ শতাংশ সুন্দরবন থেকে ধরা হয়।

“বন বিভাগের কিছু অসাধু বনরক্ষী ও কর্মকর্তা উৎকোচের বিনিময়ে এসব জেলেদের কাঁকড়া শিকারের সুযোগ করে দেন। এতে প্রকৃত জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিহির কুমার দো বলেন, “কারও বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেরা সরকারিভাবে সহায়তা পান কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যেসব জেলেরা কাঁকড়া ধরেন তারা নিবন্ধিত নয়। ফলে কর্মহীন থাকলেও নিবন্ধন না থাকায় সরকারি খাদ্য সহায়তা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের নিবন্ধনের তালিকায় আনার কাজ চলছে।”