পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ তৈরি করা হয়েছে।
Published : 09 Oct 2023, 06:57 PM
রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করে দিয়েছে পদ্মা সেতু। সড়ক পথের পাশাপাশি রেলপথ চালু হলে এই সম্ভাবনা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেতু দিয়ে রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার।
এদিন প্রাথমিকভাবে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল চলাচলের উদ্বোধন হবে। যদিও ধীরে ধীরে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে যাত্রীরা যশোর পর্যন্ত চলাচল করতে পারবেন।
পদ্মা সেতু দিয়ে রেলপথের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোর মানুষের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। কিন্তু এই রেলপথ শরীয়তপুরের সীমানার উপর দিয়ে গেলেও এই জেলায় এর স্টেশন রাখা হয়নি।
ফলে মন খারাপ শরীয়তপুরবাসীর। তারা তাদের জেলা থেকে এই রেলপথে ভ্রমণ করতে স্টেশনের দাবি জানিয়েছেন।
শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও জাজিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোবারক আলী সিকদার বলেন, “পদ্মা সেতুর জন্য দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলায় উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের জেলাও অনেক সুযোগ-সুবিধা তৈরি হয়েছে। তবে আমরা আমাদের রাস্তাটির জন্য সেভাবে বেনিফিট পাচ্ছি না। এটা বড় কষ্টের ব্যাপার।
“তারপরও পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে রেলপথ চালু হওয়ায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। আমাদের জেলার উপর দিয়ে সেই রেল যাবে। কিন্তু এই জেলায় একটি স্টেশন না থাকায় আমরা রেললাইনের সুয়োগ-সুবিধা পুরোপুরি পাব না। এজন্য আমরা এখানে একটি স্টেশন চাই।”
রেলওয়ে বিভাগ জানায়, পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ তৈরি করা হয়েছে। ৩৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ লিমিটেড।
রেলপথটি শরীয়তপুরের সীমান্তবর্তী জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার উপর দিয়ে গিয়ে মাদারীপুরে পড়েছে। কিন্তু শরীয়তপুরের জন্য কোনো স্টেশন রাখা হয়নি। শরীয়তপুরের সীমানা অর্থাৎ নাওডোবা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মাদারীপুরের শিবচরে একটি স্টেশন করা হয়েছে। ফলে শরীয়তপুরবাসীকে এই রেলে চড়তে হলে মাদারীপুরে গিয়ে উঠতে হবে।
নাওডোবা থেকে শরীয়তপুর সদরের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। আর শরীয়তপুর সদর থেকে মাদারীপুরের শিবচরের স্টেশনের দূরত্ব হবে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার।
নাওডোবা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল লতিফ ফকির বলেন, “পদ্মা সেতুর জন্য আমাদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছেড়ে দিয়েছি। তাতে আমাদের কোনো দুঃখ নেই। তবে আমাদের এলাকায় রেল স্টেশন না করায় আমরা খুবই দুঃখ পেয়েছি। সরকার চাইলে এটা করতে পারত আমাদের জন্য।”
নাওডোবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম মাদবর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু হয়েছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। কিন্তু আমাদের এ অঞ্চলে রেল সংযোগ থাকলেও কোনো স্টেশন না থাকায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী শাহরিয়ার বলেন, “রেলওয়ে স্টেশন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কাছাকাছি শিবচর অঞ্চলে করা হয়েছে। আসলে পদ্মা সেতু আগে হয়েছে; তার ডিজাইনের সঙ্গে মিল রেখে রেললাইন করা হয়েছে। এখানে রেললাইনে তো আঁকাবাঁকা করার সুয়োগ নেই।”