দেরিতে হলেও চিকিৎসা শুরুর ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলার স্বাস্থ্য প্রশাসন।
Published : 10 Nov 2022, 12:01 PM
সাপে কাটা চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যতম ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক ‘অ্যান্টিভেনম’ না থাকায় এ রোগীদের চিকিৎসা চালু হয়নি গোপালগঞ্জের সরকারি পাঁচটি হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে দেশের জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
কিন্তু গোপালগঞ্জ সদরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোনেটিতেই এখনো অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন আনা হয়নি।
তবে দেরিতে হলেও চিকিৎসা শুরুর ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলার স্বাস্থ্য প্রশাসন।
গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, “সাপে কাটা রোগীকে এই ইনজেকশন প্রয়োগে ডাক্তারদের অনীহা রয়েছে। কারণ সাপে কাটা অধিকাংশ রোগী হার্টএ্যাটাকে মারা যান। সময়মতো হাসপাতালগুলোতে না আনায়ও অনেকে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু হাসপাতালে রোগী মারা গেলে পরিবারের সদস্যরা ঝামেলা করেন।
“এছাড়া এই ইনজেকশন অধিক মজুদ রাখা যায় না। বেশি থেকে গেলে নষ্ট হয়ে যায়।”
কোটালিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নন্দা সেন গুপ্ত বলেন, “অনীহার মূল কারণ, অনেকসময় কি ধরনের সাপ দংশন করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে কখনোবা ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর রোগীদের আইসিউই সার্পোটের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমাদের তা দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।”
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এখন উপজেলা পর্যায়ে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গোপালগঞ্জে তা না পাওয়া অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও হতাশাজনক ব্যাপার। এক্ষেত্রে স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসনের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, “যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ চিকিৎসক দিয়ে প্রতিষেধক প্রয়োগ করতে হবে। তা হলেই সাপে কাটা রোগীর প্রাণ রক্ষা পাবে।”
তবে এর মধ্যেই চিকিৎসা শুরুর ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, “চিকিৎসকসহ অন্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখানে মাস্টার ট্রেইনার সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা এই চিকিৎসা দিতে এখন প্রস্তুত। তাই ২০০ অ্যান্টিভেনম ইনজেকশনের চাহিদার চিঠি দিয়েছি। এগুলো হাতে পেলে জেলার সকল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হবে।”