গ্রামীণ প্রকৃতিতে ক’দিন আগে থেকেই মিলছে শীতের অনুভূতি। এ অবস্থায় ফরিদপুরে বেড়েছে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা, যাদের অধিকাংশই শিশু। ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট কিংবা নিউমোনিয়ায় অসুস্থ শিশুদের নিয়ে স্বজনেরা ভিড় করছেন শিশু হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে।
গত তিন দিনেই জেলায় শুধু ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে ২ হাজার ৩২১ শিশু। তবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, সঠিকভাবে যত্ন নিলেই বাচ্চাদের এই ধরণের সমস্যা কমবে।
ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের কনসালট্যান্ট নিরঞ্জন কুমার দাস বলেন, “গত এক সপ্তাহে আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে ৫ শতাধিক রোগীর চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ শিশুই ডায়রিয়া সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন শীতজনিত অসুস্থতার রোগী।”
সরেজমিনে জেলার একমাত্র বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালটিতে দেখা যায়, শুধু শহর থেকে নয়, রোগী আসছে প্রত্যান্ত গ্রাম থেকেও। বিপুল সংখ্যাক রোগীর উপস্থিতিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
ভাঙ্গা উপজেলার পুখুরিয়া এলাকা থেকে ২৯ দিন বয়সী শিশুকে নিয়ে এসেছেন শাহিন আলম।
তিনি বলেন, গত তিনদিন শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া সমস্যায় ভুগছে তার শিশুটি। পরিবারের প্রথম সন্তান তাই চরম দুঃশ্চিন্তার মধ্যে আছেন তিনি।
ভাঙ্গা থেকে আসা তাসলিমা বেগমের মেয়ের বয়স দেড় মাস। দুই দিন হলো ঠাণ্ডা ও কাশির সমস্যায় ভুগছে শিশুটি। তিনি বলেন, “সন্তানের চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারি না। তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।”
জেলার সালথা উপজেলা থেকে সন্তানের চিকিৎসা করাতে এসেছেন মেহেদী হাসান ও আসিয়া দম্পতি। তারা জানালেন, প্রায় দেড় ঘণ্টা বসে আছেন ডাক্তারের অপেক্ষায়, প্রচুর রোগীর চাপ।
ওই দম্পতি আরও জানান, শীতের শুরুতেই ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছে শিশুরা। তাদের মতো অনেকেই দূরদুরান্ত থেকে তাদের প্রিয় সন্তানটিকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
তবে শিশুদের এমন সমস্যা নিয়ে আতঙ্কিত না হবার পরামর্শ দিয়ে কনসালট্যান্ট নিরঞ্জন কুমার দাস বলেন, “আমরা রোগীর স্বজনদের পরামর্শ দিচ্ছি শিশুদের প্রতি আরও বেশি যত্নবান হতে। বিশেষ করে গরম কাপড় পরানো, উষ্ণ গরম পানি পান করাতে, শিশুদের বেশি বেশি বুকের দুধ খাওয়াতে বলছি।”
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান জানান, “শীতের কারণে শিশু রোগীর চাপ বেড়েছে। তবে আতঙ্কের কারণ নেই, সময়মত বাচ্চাদের যত্ন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেই সুস্থ হবে শিশুরা।”