“পশুর চামড়া পোড়ানোর সময় নিশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়। অতি দ্রুত এ কারখানা বন্ধ করা না হলে এলাকায় বসবাস করা কষ্ট হয়ে যাবে।”
Published : 29 Jul 2024, 05:42 PM
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় পশুর চামড়া-ট্যানারির বর্জ্য পুড়িয়ে কয়েলের কাঁচামাল তৈরির কারখানার দুর্গন্ধে নাজেহাল এলাকাবাসী। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধূলসুড়া ইউনিয়নের আইলকুন্ডি গ্রামে ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে কয়েলে ব্যবহৃত কাঁচামাল তৈরির উন্মুক্ত কারখানা।
১০ জন শ্রমিক প্রায় দুই মাস ধরে কাজ করলেও কারখানার কোনো নির্দিষ্ট নাম, নিবন্ধন ও কাগজপত্র এখানকার তদারকির দায়িত্বে থাকা কেউ দেখাতে পারেননি।
শ্রমিকরা জানান, বলড়া ইউনিয়নের কোকরহাটি এলাকার লোকমান হোসেন কারখানাটির যাবতীয় তদারকির দ্বায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলড়া ইউনিয়নের নারী সদস্য ছবুরা বেগমের স্বামী।
এ কারখানাটির মূল মালিক কে তা কেউ জানেন না । এখানে ট্যানারির বর্জ্য পুড়িয়ে কাঁচামাল তৈরি করা হয়। পলিথিন, ছেড়া কাপড়, কাগজ ব্যবহার করা হয় এ চামড়া পোড়ানোর জ্বালানি হিসেবে।
উন্মুক্ত জমিতে এসব পশুর চামড়া পোড়ানোর সময় দুর্গন্ধে ভোগান্তিতে এলাকাবাসী।
ওই এলাকার কৌশিক বলেন, “অফিসে যাওয়া-আসার সময় চামড়া পোড়ার দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস নিতেও সমস্যা হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধ করার দাবি জানাই।”
আইলকুন্ডি গ্রামের তোতা মিয়া বলেন, “দিনে কম চামড়া পুড়ার দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। তবে সন্ধ্যার পর থেকে দুর্গন্ধে বাড়ি ঘরে থাকা দুষ্কর।”
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সদস্য রুবেল হোসেন বলেন, “প্রতিদিন এসব পঁচা চামড়া পোড়ানোর দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। আশপাশের বাড়িতেও বসবাস করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
“চামড়া পোড়ানোর সময় নিশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়। অতি দ্রুত এ কারখানা বন্ধ করা না হলে এলাকায় বসবাস করা কষ্ট হয়ে যাবে।”
এ বিষয়ে ধুলশুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জায়েদ খান বলেন, “এ বিষয়টি আমি কয়েকদিন আগে শুনলেও ব্যাক্তিগত কাজে এলাকার বাইরে থাকায় খোঁজ নিতে পারিনি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিব।”
পশুর বর্জ্য পোড়ানোর কারখানার মালিক কে তা কেউ জানা যায়নি। তবে তদারকির দায়িত্বে থাকা লোকমান হোসেন বলেন, “এ কারাখানার মালিককে বছর চুক্তিতে জমিটি ভাড়া দিয়েছি। তবে এ কারখানার মালিকের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ দেখ ভালের দ্বায়িত্বে আমি আছি। খুব বেশি গন্ধ হয় না। ট্যানারির চামড়া পুড়িয়ে কাঁচামাল তৈরি করে ঢাকায় ১৬ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়।”
এ কারখানার মালিক কে জানতে চাইলে তিনি বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “পশুর বর্জ্য পোড়ানো হলে দুর্গন্ধের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। এতে বায়ু দূষিত হবে।”
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, পশুর বর্জ্য পোড়ানো বিষেয়ে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।