সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেয়। পরে তারা বেতন চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
Published : 23 Aug 2024, 04:23 PM
“গত পাঁচ মাস ধরে বেতন পাই না। আমাদের খুব কষ্ট করে চলতে হচ্ছে। দোকান মালিকরা বাকিতে আর বাজার দিতে চাচ্ছে না। কেউ ধারদেনাও দিচ্ছে না।”- কথাগুলো বলছিলেন ‘মাহমুদ জিনস লিমিটেড’ পোশাক কারখানার লাইন চিফ আজহার হোসেন।
বেতন না পেয়ে আজহারের মতো একই বিড়ম্বনায় পড়েছেন এ কারখানার অন্য শ্রমিকরাও। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় অবস্থিত কারখানাটির শ্রমিক ও কর্মচারিরা তাদের পাওনার দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর নিতাই চন্দ্র জানান, শুত্রবার সকাল ৯টা থেকে মাহমুদ জিনস লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিলে সড়কের দুই পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে তারা সরে গিয়ে কারখানার পাশে অবস্থান নেয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করছিল।
বিক্ষোভ চলাকালে কারখানার লাইন চিফ আজহার হোসেন বলছিলেন, “বাসার মালিক ঘর ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। বাচ্চাদের স্কুলের বেতন দিতে না পারছি না। ফলে তাদের স্কুলে পাঠাতে চাইলেও যেতে চাচ্ছে না।”
ওই সময় কারখানার কয়েকজন শ্রমিক জানান, তিন মাস ধরে তাদের বেতন দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। সুপারভাইজার ও ইনচার্জসহ উপরের অন্যান্য স্টাফদের পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বুধবার বিকালেও বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ওই সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার বেতন পরিশোধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বেতন না পেয়ে রাতেই শ্রমিকেরা বেতনের দাবিতে কারখানার সমানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।
তারা বলছেন, সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেয়। পরে সকাল ৯টার দিকে বেতন চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এক পর্যায়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, শ্রমিকরা কারখানার সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। ওই মহাসড়কে তখন দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের আশ্বাস দিলে বেলা পৌনে ৩টার দিকে তারা মহাসড়ক ছেড়ে কারখানার সামনে অবস্থান নেয়। বেলা সাড়ে তিনটাও ওই পথে গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
কারখানার সুপারভাইজার বাচ্চু মিয়া বলেন, মালিক-কর্তৃপক্ষ তাদের বকেয়া বেতন দেওয়ার বিষয়ে কোনো কথাই বলছেন না। বাধ্য হয়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছেন।
একই কথা জানালেন সুইং অপারেট হালিমা খাতুনসহ অন্য শ্রমিকরা।