প্রসূতির মৃত্যু: মেহেরপুরে ক্লিনিকের মানদণ্ড দেখতে চায় আদালত

চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি মেহেরপুর শহরের দারুস সালাম ক্লিনিকে অপরাশেনের টেবিলে প্রসূতি সুমাইয়া খাতুন মারা যান।

মেহেরপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2023, 06:05 PM
Updated : 30 Jan 2023, 06:05 PM

মেহেরপুরে অপারেশনের সময় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশের পর জেলার সব বেসরকারি হাসপাতালের মানদণ্ড যাচাইয়ের আদেশ দিয়েছে আদালত।

সোমবার মেহেরপুরের বিচারিক হাকিম এসএম শরীয়ত উল্লাহ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।

গত ২২ জানুয়ারি মেহেরপুর শহরের দারুস সালাম ক্লিনিকের অপরাশেন টেবিলে সুমাইয়া খাতুন নামের এক প্রসূতি মারা যান।

আদালত সুমাইয়া খাতুনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তসহ জেলার সকল ক্লিনিকগুলোর বৈধ্যতা যাচাই ও কার্যক্রম পরিচালনায় সক্ষমতা ও সঠিকতা আছে কিনা ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তার প্রতিবদেন দিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (সার্কেল) নির্দেশ দেয়।

একই সঙ্গে ক্লিনিকগুলো ১৯৮২ সালের চিকিৎসক অনুশীলন এবং প্রাইভেট ক্লিনিক ও ল্যাবরোটরীজ রেগুলেশন অধ্যাদেশ এবং ২০১০ সালের বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ও বিধি মতো পরিচালিত হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখতে বলা হয় সিভিল সার্জনকে।

সিভিল সার্জনকে ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, ২২ জানুয়ারি রোববার রাতে মেহেরপুর শহরের দারুস সালাম ক্লিনিকে অপারেশন টেবিলে প্রসূতি সুমাইয়া মারা যান। সুমাইয়া মুজিবনগর উপজেলার ডোলমারী গ্রামের মিলন হোসেনের স্ত্রী।

গণমাধ্যমে আসা পরিবারের অভিযোগ থেকে জানা যায়, ক্লিনিক মালিক চিকিৎসক আব্দুস সালাম নিজেই অপারেশন করতে গিয়ে সুমাইয়া মারা যান। অপারেশনের সময় কোনো এনেসথেসিস্ট চিকিৎসক না থাকায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত এ সংবাদ আদালতের নজরে এলে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।

আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, প্রায়ই মেহেরপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসায় অবহেলা এবং বিধিবহির্ভূতভাবে ক্লিনিক পরিচালনার অভিযোগ উত্থাপিত হয়। এর সঙ্গে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত। একজন অসুস্থ মানুষ চিকিৎসক ও ক্লিনিকের উপর আস্থা এবং বিশ্বাস স্থাপন করে নিজের শরীরের উপর হস্তক্ষেপ করার অধিকার প্রদান করেন।

“হাসপাতাল, ক্লিনিক বা চিকিৎসকের অবহেলা একজন রোগীর সঙ্গে প্রতারণা এবং বিশ্বাসভঙ্গের শামিল, যা দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

“এছাড়া উক্ত অবহেলা একজন ব্যক্তির জীবনকে বিপন্ন করে তুলতে পারে, যা দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক), ৩৩৬, ৩৩৭ ও ৩৩৮ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”