দুটি ছাড়া দেশের সব নদ-নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
Published : 05 Oct 2024, 02:41 PM
খাল, বিল, নদী আর পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা শেরপুরে যে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে, সেই পরিস্থিতি একদিনের মধ্যে উন্নতি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
কেন্দ্রের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সজল কুমার রায় শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বলেন, “শেরপুরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর পানি আরও কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।”
তিনি জানান, দুইটি নদী ছাড়া দেশের সব নদ-নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
সজল কুমার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল যে ভুগাই নদীর পানি শেরপুরের নাকুয়াগাঁও পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, সেখানে পানি কমেছে। গতকালের তুলনায় প্রায় ১৭১ সেন্টিমিটার পানি কমে সেখানে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টার মধ্যে এটার পানি বিপৎসীমার নিচে চলে আসবে আশা করি।
“অন্যদিকে জামালপুরে জিঞ্জিরাম নদীর পানি গোয়ালকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এটা ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা স্থিতিশীল থাকতে পারে। এরপর ২৪ ঘণ্টা থেকে কমতে শুরু করবে৷ এছাড়া দেশের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।”
পানিসম্পদ সচিব নাজমুল আহসান জানিয়েছেন, শেরপুরে বৃহস্পতিবার রাতে অতি ভারি (২২৫ মিমি) বৃষ্টিপাত হয় । সেই সঙ্গে উজানের প্রবল পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী উপজেলায় মহারশি নদীর বাঁধের ৪টি স্থানে ও নালিতাবাড়ী উপজেলার চিল্লাখালি নদীর বাঁধের দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়।
তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে স্থানীয় পাহাড়ি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। সেই সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল যোগ হয়ে শেরপুরের বন্যা ভয়াল রূপ পেয়েছে।
অনেক স্থানে পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবল তোড়ে ভেঙে গেছে ঘরবাড়ি, গাছপালা। তলিয়েছে ফসলের খেত, ভেসে গেছে মাছের পুকুর ও ঘের। অনেক বাড়িতে রান্না-খাওয়া বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। বানভাসি মানুষ উঁচু স্থানে ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে।
এ বিষয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান শনিবার সকালে বলেন, পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের জন্য ঢাকা ও ময়মনসিংহ থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবীরা এবং উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছে।