ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রায় থেমে থেমে যানজট

চন্দ্রা ত্রিমোড়ে ঘরমুখো মানুষের অনেককে যানবাহন না পেয়ে দীর্ঘ সময় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2023, 06:43 PM
Updated : 19 April 2023, 06:43 PM

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রায় বিকালের পর থেকে থেমে থেমে যানজট হয়েছে। 

চন্দ্রা ত্রিমোড়ে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়েছে কয়েকগুণ। যানবাহন না পেয়ে অনেককে দীর্ঘ সময় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। 

অন্যদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ছিল অনেকটা স্বাভাবিক। 

বুধবার ভোর থেকে ঈদে ঘরমুখো মানুষ চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় ভিড় করতে শুরু করে। অনেকে অগ্রিম বাসের টিকেট করে রেখেছেন। তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত বাস পেয়ে গেলেই বাসে উঠে পড়ছেন। কিন্তু যারা আগে থেকে টিকেট করেননি তারা তাৎক্ষণিকভাবে টিকেট পেতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। অনেককে দরদাম করে ভাড়া মিটিয়ে গন্তব্যে রওনা হতে দেখা গেছে। 

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, ঢাকা-টঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর থেকে কালিয়াকৈর সড়কের অংশে যানবাহনের তেমন চাপ নেই বললেই চলে। তবে নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়কে ভোর থেকে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। এতে ওই সড়কের যানবাহনগুলো ধীর গতিতে চলছে।

চন্দ্রা ত্রিমোড়ে যাত্রীবাহী বাসগুলি তাদের ইচ্ছেমতো থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করা হয়। এ কারণে পেছনের দিকের গাড়িগুলো তাদের স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। এতে যানবাহনের সারি লম্বা হয়ে যাচ্ছে। বিকালের পর থেকে চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়।

ঢাকা থেকে গাবতলী হয়ে চন্দ্রা আসা টিআর ট্রাভেলসের সহযোগী আব্দুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, গাবতলী থেকে আসতে কয়েকটি স্থানে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আর চন্দ্রার আগে দুই কিলোমিটার আগে নন্দন পার্ক থেকে যানজট শুরু হয়। কিন্তু চন্দ্রা এসে যানজট হওয়ার মতো তেমন কোনো কারণই চোখে পড়েনি। 

চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকার ব্যবসায়ী মো. রেজাউল করিম বলেন, চন্দ্রা মোড়ে বাসগুলি দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকছে তাদের ইচ্ছেমতো। যাত্রী উঠাতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ করছে। একটু যাচ্ছে, একটু থেমে থাকছে। যাত্রীদের কাছ থেকে কীভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যায় সেই চেষ্টায় আছে পরিবহন শ্রমিকরা; যার কারণে পিছনের বাসগুলি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে যানবাহনগুলো থেমে থেমে চলাচল করছে। 

বগুড়া সদরের বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম  স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকেন কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায়। তার সঙ্গে কথা হয় চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায়। 

সাইফুল ইসলাম বলেন, “সকাল ৮টা থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু ভাড়া বেশি চাওয়ায় উঠছি না। যে বাসে কম ভাড়া নেবে সেই বাসে উঠব।” 

কোনাবাড়ি হাইওয়ে থানার ওসি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সকালে যানবাহনের কিছুটা চাপ ছিল; তবে এটি স্বাভাবিক সময়ের চিত্র। এখানে ঈদের ছুটির চাপ পড়েনি। শিল্প কারখানা ছুটি হলে যানবাহনের চাপ বাড়বে কয়েকগুণ। যানজট নিরসনের হাইওয়েসহ বিভিন্ন বাহিনীর পুলিশ সদস্যরা  মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দায়িত্ব পালন করছে।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক 

গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশের পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো রয়েছে। যদিও সকাল থেকেই মহাসড়কের চান্দনা চৌরস্তাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নানা শ্রেণি-পেশার ঘরমুখো মানুষের ভিড় রয়েছে এবং যানবাহনেরও চাপও রয়েছে অনেক বেশি। মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাস মোড়, বোর্ডবাজার, স্টেশন রোডসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ বিশেষ দায়িত্ব পালন করছে। অতিরিক্ত সংখ্যক যাত্রীর তুলনায় কোনো কোনো রোডের যানবাহন কম রয়েছে। তাই নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে অনেকেরই দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আর এই সুযোগে একটু বেশি ভাড়া নেওয়ার চেষ্টা করছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, এবারের ঈদযাত্রায় এই মহাসড়কের যানবাহন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাতে সার্বক্ষণিকভাবে ৩০০ ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন সদস্য ও রোভার স্কাউট মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া কোথাও ভাড়া বেশি নেওয়ার খবর পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।    

মহাসড়ক পরিদর্শনে অতিরিক্ত আইজিপি 

হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ ঈদযাত্রা সুশৃঙ্খল রাখতে কাজ করছে। যেকোনো বছরের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রা নিরাপদ হবে। ঈদ উপলক্ষে হাইওয়ে পুলিশের প্রায় আড়াই হাজার পুলিশ মহাসড়ক কাজ করছে। ঈদে পুলিশ সদস্যরা ছুটিতে যায় না। বেশিরভাগ সদস্যরা ঈদযাত্রা সুন্দর করতে মাঠে কাজ করে। 

বুধবার দুপুরে ঈদযাত্রা উপলক্ষে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পরিদর্শন শেষে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি।