প্রশাসনকে আগেই জানানো হয়েছিল কিনা তা ‘স্মরণে নেই’ দাবি করে এসপি বলেন, আজকের ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Published : 28 Feb 2025, 11:10 PM
নোয়াখালী সদর উপজেলায় এক প্রবাসীর বাড়িতে হামলা- ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার বিকালে সদর উপজেলায় কাদির-হানিফ ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে সুধারাম থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করে; বাকিরা পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কৃষ্ণরামপুর গ্রামের প্রয়াত হামিদ উল্যার ছেলে সৌদি প্রবাসী নুরুল আফসার সুমন (৪৫) এবং একই এলাকার শাহ্ আলমের দুই ছেলে আলমগীর (৩৫) ও জাহাঙ্গীরের (৩৭) সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ আছে। বিষয়টির মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে একাধিবার সালিশ বৈঠকও হয়।
আলমগীর এক মামলায় কারাগারে ছিলেন।সম্প্রতি তিনি জামিনে বের হয়ে এসে সুমনকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন।
শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে আলমগীর ও জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ৬-৭টি মাইক্রোবাসে আসা অর্ধশতাধিক হামলাকারী সুমনের বাড়িতে হানা দেয়।
তারা বসতঘরের গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে সুমনের স্ত্রী, শাশুড়িসহ পরিবারের অন্য নারী সদস্যদের পিটিয়ে আহত করে।
পরে হামলাকারীরা পুরো ঘরে তাণ্ডব চালিয়ে নগদ টাকা, সোনার গহনাসহ মালামাল লুটে নেয়। যাওয়ার সময় তারা ঘরের খাট, সোফা, লেপ-তোষক, হাড়ি-পাতিলসহ তৈজসপত্র ঘর থেকে বের করে পাশের পুকুর ও সড়কে ফেলে দিয়ে যায়।
সুমনের স্ত্রী অনিমা আক্তার বলেন, “আমাদের তিল তিল করে সাজানো ঘর সংসার সন্ত্রাসীরা মুহূর্তের মধ্যে শেষ করে দিয়ে গেছে। সব ভেঙেচুরে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে তারা। সোনাদানা, টাকা পয়সা, চেক বই সবই নিয়ে গেছে।”
সুমনের শাশুড়ি নার্গিস আক্তার বলেন, “সন্ত্রাসীরা আমাকে, আমার মেয়েকে, আমারদের সবাইকে মেরে আহত করেছে। তারা পুরো ঘরবাড়ি শ্মশান বানিয়ে রেখে গেছে। আমরা এর উপযুক্ত বিচার চাই।”
নুরুল আফসার সুমন বলেন, “আলমগীর একজন সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে সে জেল খাটে। জেল থেকে বের হয়ে সে আমাকে বার বার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেনি বলেই আজ আমাদের সবকিছু শেষ করে দিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা।
তিনি আরো বলেন, “আমার ২২ বছরের প্রবাস জীবনের সব আয়-উপার্জন শেষ হয়ে গেছে। সন্ত্রাসীরা ৩৬ ভরি সোনার গহনা, ৭ লাখ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র, চেক বই নিয়ে গেছে।”
যাওয়ার সময় হামলাকারীরা ফাঁকা গুলি ও হাত বোমা ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে বলে জানান স্থানীয়রা।
প্রশাসনকে আগেই জানানোর বিষয়টি স্মরণে নেই দাবি করে জেলার এসপি মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, “তবে আজকের ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সুধারাম থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশের দুটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। একই সময় সেনাবাহিনীর টহল দলও সেখানে যায়।
“ঘটনাস্থল থেকে জাহাঙ্গীরকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”