নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে নোঙর করা তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণে আটজন আহত হয়েছেন৷
তাদের মধ্যে দগ্ধ পাঁচজন রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন৷
শনিবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার গাজী সেতুর পাশে দড়িকান্দি ডকইয়ার্ডে নিজস্ব জেটিতে নোঙর করে রাখা ‘ও টি সাংহাই-৮’ নামে তেলবাহী ট্যাংকারটিতে বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানান রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান।
পরিদর্শক আতাউর রহমান বলেন, “বন্দরে তেল খালাস করার পর খালি জাহাজটি ঘাটে নোঙর করা ছিল৷ রাতে ট্যাংকারের ভেতরে জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফেরণ ঘটে৷
“মুহূর্তেই জাহাজটিতে আগুন ধরে গেলে শ্রমিক ও কর্মচারীরা দগ্ধ হন৷ তাদের মধ্যে কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ তবে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি৷”
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- জাহাজটির স্টাফ আ. মান্নান রাহাদ (২৩), হুমায়ুন কবির (৫৪), তাজুল ইসলাম লিমন (২৪), ইমতিয়াজ আহমেদ (৪২), রুবেল (৩৮), সোহেল (৩৮), নাজমুল (৩৩) ও রাকিব (২৪)।
জাহাজটির শ্রমিকরা জানান, ট্যাংকারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হবার পরপরই জাহাজে আগুন ধরে যায়৷ এ সময় জাহাজের অনেকেই শীতলক্ষ্যা নদীতে লাফিয়ে পড়েন৷ পরে সহকর্মীদের সহযোগিতায় সাঁতরে তারা তীরে ওঠেন৷ এরমধ্যেই কয়েকজন দগ্ধ হন৷
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, “খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট পৌঁছে আগুন নেভায়৷ জাহাজের তেলবাহী খালি ট্যাংকারে জমা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ হয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”
রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম জানান, জাহাজে আগুনের ঘটনায় মোট আটজনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন৷
দগ্ধ তাজুলের শরীরের ৬৭ শতাংশ, হুমায়ুনের ৩০, ইমতিয়াজের ৩০, রুবেলের ৪৫, সোহেলের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক৷ তাদের সকলের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে৷
এ ছাড়া রাকিব, রাহাদ ও নাজমুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।
গত বছরের ১৬ নভেম্বর এই জাহাজটির মেরামতের কাজ করার সময় ট্যাংকার বিস্ফোরণে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
আরও পড়ুন