মামলার পর অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বলেন ওসি।
Published : 11 Jan 2025, 11:14 PM
গাজীপুরের শ্রীপুরে সহকর্মীকে মুক্ত করতে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে পোশাক শ্রমিকের করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার মামলার করার পরপরই শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নয়ন কর জানান।
তিনি বলেন, ওই নারী চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
আসামিরা হলেন- শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া দক্ষিণ খণ্ড এলাকার আশরাফুল ইসলাম (২৯), উপজেলার কাওরাইদ (মোড়লপাড়া) এলাকার সাগর (২৫), কেওয়া দক্ষিণ খণ্ড (গারোপাড়া) এলাকার ইয়াসিন (২৪), নেত্রকোণা সদর উপজেলার হাটখোলা বাজার এলাকার মনিরুল ইসলাম নিরব (১৮) এবং তাদের সহযোগী অজ্ঞাত তিনজন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার কাওরাইদ (মোড়লপাড়া) এলাকার সাগর (২৫), শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া দক্ষিণ খণ্ড এলাকার আশরাফুল ইসলাম (২৯) এবং নেত্রকোণা সদর উপজেলার হাটখোলা বাজার এলাকার মনিরুল ইসলাম নিরব (১৮)।
নিরব কেওয়া পূর্বখণ্ড এলাকার নজরুল ইসলামের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
থানায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পোশাক শ্রমিক নাজমুল হক (২৭) টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার কোনাবাড়ী গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।
তিনি শ্রীপুর পৌরসভার মাধখলা এলাকার মাহমুদল্লাহর বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় ইশরাক স্পিনিং মিলে চাকরি করেন।
বাদী ২৩ বছর বয়সি ওই নারী মামলার এজাহারে বলেন, নাজমুল হক ও তিনি একই কারখানায় চাকরি করেন। বুধবার বাদী বাসায় ছিলেন। ওইদিন বিকাল ৩টায় নাজমুল ফোন দিয়ে তার সমস্যার কথা জানিয়ে ফখরউদ্দিন কারখানার মোড়ে বটগাছের নিচে যেতে বলেন।
তার ফোন পেয়ে যেখানে যাওয়া মাত্রই আসামি সাগর বাদীর পরিচয় জানতে চায়।
পরিচয় দেওয়ার পর সাগর বাদীকে ফখরউদ্দিন প্রিন্ট কারখানার গেইট সংলগ্ন স্থানীয় নজরুলের বাসায় নিয়ে যান।
ওই বাসায় গিয়ে বাদী দেখেন, সহকর্মী নাজমুলকে আসামিরা মারধর করছে। পরে তিনি মারধর করতে নিষেধ করে নাজমুলকে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু যুবকরা বিনিময়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন।
দাবি করা টাকা দিতে রাজি না হলে ওই নারীকে পাশের কক্ষে নিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে আসামি আশরাফুল ও সাগর জোর করে পালাক্রমে ধষর্ণ করেন।
তারা বেরিয়ে গেলে অজ্ঞাত তিন আসামি ঘরে ঢুকে আবারো ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে বলে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে।
বাদী বলেন, “পরে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে আমার মোবাইল ফোন রেখে মনিরুল ইসলাম নিরব একটি অটোরিকশা ভাড়া করে দিলে আমি বাসায় ফিরি। ঘটনাটি জানিয়ে স্বামী ও বাড়ির লোকজনের সঙ্গে পরামর্শ করে শনিবার থানায় মামলা দায়ের করি।”
পোশাক শ্রমিক নাজমুল হক বলেন, বুধবার বিকাল ৪টায় বেতনের টাকা তুলে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। সহকর্মী ইয়াছিন তাকে ফোন করে ফখরুদ্দিন মোড়ে যেতে বলেন।
নাজমুলের অভিযোগ, “সেখানে গেলে ইয়াছিন ও তার সহযোগীরা আমাকে একটি বাড়িতে নিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করে ২ লাখ টাকা দাবি করে। আমার সঙ্গে থাকা বেতনের সাড়ে ১৪ হাজার টাকা নিয়ে যায় তারা। পরে আরো টাকার জন্য মারধর করলে আমি দুই ব্যক্তির কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে চার হাজার টাকা তাদের এনে দিই।”
শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, “মামলার পরই অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার তাদের গাজীপুর আদালতে পাঠানো হবে।”