দালালদের হাতে অসহায় রোগীরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ আছে।
Published : 10 Nov 2024, 12:31 AM
দালালদের দৌরাত্ম্যে অসহায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তা, কর্মচারী, ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্সরা প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন।
শনিবার সকালে হাসপাতাল চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে বার বার অভিযোগ করেও মিলছে না প্রতিকার। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।
সাদ্দাম ও তার সহযোগীদের কাছে হাসপাতালের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্সদের হয়রানি ও হুমকির প্রতিবাদে নেমেছেন তারা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন টেকনিশিয়ান জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের একটি কক্ষ দেয়, সেখানে রোগীদের ২৪ ঘণ্টা ইসিজি সেবা দেওয়া হয়।
কিন্তু এখানে আগে থেকেই দালালরা ইসিজি করে রোগী প্রতি ৭০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়।
কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৮০ টাকা করে ইসিজি করায় তাদের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
তাই দালালরা সব সময় হয়রানি করাসহ হত্যার হুমকি দেয় স্টাফদের।
এতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও দাবি করেন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে হাসপাতালের এক টেকনিশিয়ান বলেন, বুধবার রাতে তিনি ইসিজি কক্ষে ডিউটিতে ছিলেন। তখন সাদ্দাম জোর করে কক্ষে প্রবেশ করেন। ‘চাকরি খাওয়ার’ ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ইসিজি মেশিনের দুইটি লিড নিয়ে নেন। ফলে বৃহস্পতিবার থেকে হাসপাতালে ইসিজি সেবা বন্ধ আছে।
এ ঘটনার পর ওই টেকনিশিয়ান বিষয়টি হাসপাতালের সহকারী পরিচালককে জানান।
গভীর রাতে বাইরে থেকে আসা কিছু লোক মানহীন ইসিজি মেশিন নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করে রোগীদের ইসিজি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
টেকনিশিয়ান বলেন, হাসপাতালে ইসিজি সেবা চালুর পর থেকেই সাদ্দাম তাদের বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন। সাদ্দাম জোর করে ইসিজির লিড খুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তারা কর্মবিরতি ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে প্রশাসনকে বার বার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করার পরও প্রশাসন সাদ্দামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তাই সাদ্দামকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও হাসপাতালে কর্মপরিবেশ ফিরে না আসা পর্যন্ত ইসিজি সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন তারা।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রফিকুল হাসান বলেন, “ইসিজি বিভাগের টেকনিশিয়ানদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দালাল চক্রের হোতা সাদ্দামের বিরুদ্ধে আইনগত সহায়তা চেয়ে পাবনা জেলা পুলিশকে একটি চিঠি দিয়েছি।
তিনি বলেন, “দালালদের কাছে এক প্রকারে অসহায় হয়ে পড়েছি। দিনে প্রচণ্ড কড়াকড়ি থাকায় তারা রাতে হাসপাতালে ঢুকে এসব অপকর্ম চালায়।
“আমরা একাধিকবার পদক্ষেপ নিয়েছি, তাতে স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। এ ধরনের সমস্যা নিরসনে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে একটি স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে সাদ্দামের বক্তব্য জানাতে তার ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, “শৃঙ্খলা রক্ষা বা হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তায় টহলসহ নানাভাবে পুলিশ কাজ করছে। পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমোদন পেলে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প দেওয়া সম্ভব। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”