দেয়ালে গ্রাফিতি করতে বাধা ও মুছে ফেলার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা।
Published : 16 Aug 2024, 09:09 PM
রাঙামাটিতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে সরকারি চাকরিতে পাঁচ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের দাবি উঠেছে।
শুক্রবার পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি (আদিবাসী) ছাত্র সমাজের ব্যানারে আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল থেকে এই দাবি উঠানো হয়।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সারাদেশে লড়াইয়ের নানা অধ্যায় নিয়ে গ্রাফিতি, দেয়াল লিখন করছেন শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানেও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়।
দেয়ালে গ্রাফিতি করতে বাধা ও মুছে ফেলার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। সকালে রাঙামাটি শহরের কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম চত্বর থেকে মিছিল বের করা হয়।
শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশ করে। এতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও বক্তব্য দেন।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি টিকো দেওয়ান বলেন, “তিন পার্বত্য জেলায় নৃ-গোষ্ঠী বা আদিবাসী যারা আছি এক শতাংশ কোটা দিয়ে কী করবো? আমরা তো বাড়তি কোটা চাইনি। তাহলে আমার কোটা কেন কমানো হলো?
“আমরা নতুন সরকারের কাছে আগের পাঁচ শতাংশ কোট পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি। এটা আমাদের অধিকার। আমাদের অধিকার কাউকে কেড়ে দিতে দেব না। প্রয়োজনে অধিকার আদায়ে আবারও রাজপথে নামবে শিক্ষার্থীরা।”
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০ শতাংশ সংরক্ষিত কোটার সংস্কার চেয়ে জুলাই মাসে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তুলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের নানা ধাপ পেরিয়ে অনেক মানুষের জীবনহানির পর ২৩ জুলাই সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সরকারি চাকরির কোটা ব্যবস্থা পুনর্বিন্যস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার, যাতে সব গ্রেডের নিয়োগে কোটা থাকে মোট সাত শতাংশ।
এর মধ্যে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
এরপরও আন্দোলন থামেনি। শিক্ষার্থীরা রাজপথে নিহত দুই শতাধিক মানুষের হত্যার বিচারের দাবি শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবিতে রূপ নেয়। যার জের ধরে ৫ অগাস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা।
রাঙামাটির সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন রাঙামাটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী উসাই মং মারমা, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ক্যাসুনু মারমা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি চিক্ক তালুকদার।
তারা অভিযোগ করেন, সারাদেশের মত তিন পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন ইস্যুতে গ্রাফিতি অঙ্কন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। বেশ কয়েটি স্থানের গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়েছে এবং অনেক স্থানে অঙ্কনে বাধা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে তারা বলেন, সংবিধানে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ হিসেবে নয়, ‘আদিবাসী’ হিসাবে স্বীকৃতি করতে হবে।
এ ছাড়া পাহাড়ে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধ, উন্নয়ন ও পর্যটনের নামে পাহাড়িদের উচ্ছেদ বন্ধ করা, জেলা পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান বক্তারা।