তিন দিন আগে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটকের দাবি করেছে পুলিশ।
Published : 29 Nov 2024, 10:52 PM
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় বাবাকে না পেয়ে কিশোর ছেলেকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ করেছে পরিবার। যদিও পুলিশ বলছে, ওই কিশোরকে তারা অভিযানে ‘গ্রেপ্তার’ করেছেন।
কিশোরের পরিবারের অভিযোগ, ২৬ নভেম্বর ভোরে যুবলীগ নেতাকে ধরতে এসে না পেয়ে তার স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে ধরে নিয়ে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
এ ঘটনা নিয়ে শুক্রবার রাতে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে টেকনাফ থানা।
টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের দাবি, ঘটনার দিন ভোরে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছে পাওয়া ব্যাগ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি জব্দ করা হয়েছে।
ওই কিশোর স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এবং তার বাবা একজন জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য।
ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, “২৬ নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে এই অভিযান চালানো হয়। সেই সময় একটি বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে দুইজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে একজনকে আটক করা হয়।
“পরে তার হাতে থাকা একটি নীল রংয়ের শপিং ব্যাগের ভেতর একটি বিদেশি পিস্তল, ছয়টি গুলি এবং ৪০টি নীল রংয়ের কার্তুজ পাওয়া যায়। পরে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তা জব্দ করা হয়।”
ওই শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে ওসি বলেন, “অস্ত্রটি ওই কিশোরের বাবা তাকে পাশের বাড়ির পেছনে লুকিয়ে রাখার জন্য দিয়েছিলেন। কিশোরের বাবা সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায় জড়িত।”
এ ঘটনায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার রাত ৮টার দিকে কিশোরের বাবা অভিযোগ করেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমাকে না পেয়ে আমার ছেলেকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়েছে। সে খুব মেধাবী। ২০২১ সালে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সে ড. গাজী কামরুল ইসলাম বৃত্তি লাভ করে।
“২০২২ সালে সে পঞ্চম শ্রেণিতেও বৃত্তি পায়। সপ্তম শ্রেণির চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় আমার ছেলে অংশ নিতে পারল না।”
মামলার দুজন সাক্ষীর সঙ্গেও কথা বলেছে বিডিনিউজ।
একজন নারী বলেন, “ওই দিন মধ্যরাতে পুলিশ আমার ঘরে প্রবেশ করে। কোনো কথা না বলে ঘরের আলমারি খুলে ওই শিক্ষার্থীকে খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে আলমিরাতে অস্ত্র পেয়েছে বলে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে চলে যান তারা।”
আরেক সাক্ষী এক ব্যক্তি বলেন, “ভোরে মসজিদের যাওয়ার পথে পুলিশের ওসি আমাকে দাঁড় করান। এ সময় ওই কিশোর শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে বের করতে দেখি। ওসি বলেন, অস্ত্রসহ শিশুটিকে আটক করেছেন। এরপর একটি কাগজে স্বাক্ষর নেন।”