শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসে সাইক্লিংয়ে দুটি রৌপ্য ও একটি ব্রোঞ্জ পদক জেতা ক্রীড়াবিদ মারুফ হোসেন বাড়ি ফিরলেন লাশ হয়ে।
ঢাকা থেকে ট্রেনে বাড়ি ফেরার পথে মঙ্গলবার সকালে বাড়ির কাছে চিরিরবন্দর রেল স্টেশনের অদূরে তিনি ট্রেন থেকে পড়ে মারা যান।
মারুফ চিরিরবন্দর উপজেলার আউলিয়াপুকুর ইউনিয়নের বড়বাউল এলাকার আনিছুর রহমানের ছেলে। দরিদ্র পরিবারের এই তরুণ সাইক্লিং এবং অ্যাথলেটিকসে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পর্যায়ে বহু পদক অর্জন করেছেন।
মারুফ লেখাপড়ায়ও মেধাবী ছিলেন। দিনাজপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
তার এমন মৃত্যুতে পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মারুফের প্রশিক্ষক জাহাঙ্গাীল আলম জানান, শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনিসহ তার টিম ট্রেনে ফিরছিল। মারুফ তিনটি পদক অর্জনের কারণে বেশ উৎফুল্ল ছিলেন। তাদের সবাই একসঙ্গে দিনাজপুর স্টেশনে নামার কথা ছিল।
“কিন্তু ট্রেন মারুফের বাড়ি চিরিরবন্দর উপজেলায় আসলে সে চলন্ত ট্রেনের দরজা থেকে পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”
“তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রেলের সিগনাল পোস্টের সঙ্গে ধাক্কায় পড়ে গিয়ে তিনি প্রাণ হারান বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
তিন ভাইয়ের মধ্যে মারুফ ছিলেন দ্বিতীয়।
মারুফের বাবা আনিছুর রহমান বলেন, “লেখাপড়া ও খেলাধুলায় সে ছিল আমাদের স্বপ্ন। তাকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। পড়ার টেবিল আর খেলার মাঠ ছিল তার বিচরণস্থল। মারুফের এমন মৃত্যুতে আমাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।”
মারুফের বড় ভাই মিলন বলেন, অ্যাথলেটিকস আর সাইক্লিংয়ে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় তার সঙ্গে কেউ পেরে উঠত না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে খেলাধুলায় তার পুরস্কার ও সনদ রয়েছে শতাধিক।
“সে আগামীতে ক্রীড়া জগতে দেশের জন্য কিছু করবে – এটা আমাদের বিশ্বাস ছিল। কিন্তু তার এই দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে সব শেষ হয়ে গেল।”
শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় মারুফ সাইক্লিংয়ে অংশ নিয়ে সোমবার রাতে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে দিনাজপুরে ফিরছিলেন।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে চিরিরবন্দর রেল স্টেশনে প্রবেশের সময় ট্রেন থেকে তিনি পড়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।