নারায়ণগঞ্জে শুক্রবার থেকে দুদিনের এই সাধুসঙ্গ ও মেলার আয়োজন শুরুর কথা থাকলেও ‘তৌহিদী জনতা’র বিক্ষোভ, হুমকির মুখে সেটি বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন।
Published : 24 Nov 2024, 09:31 PM
নরসিংপুর গ্রামে ‘মহতি সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’ বন্ধ, মেলায় আগত সাধু ও লালন ভক্তদের লাঞ্ছিত করার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জের ৭১টি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।
রোববার বিকালে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যসচিব ধীমান সাহা জুয়েল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে, এ ধরনের ঘটনাকে ‘সংস্কৃতির ওপর আঘাত ও ষড়যন্ত্র’ বলা হয়েছে।
সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামে ‘মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি’ প্রাঙ্গণে প্রতিবছরের মত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে দুদিনের এই সাধুসঙ্গ ও মেলার আয়োজন শুরুর কথা ছিল।
কিন্তু স্থানীয় ‘তৌহিদী জনতা’র বিক্ষোভ, হুমকির মুখে সেটি বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন।
এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে রোববার নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের অন্তর্ভুক্ত ও অন্যান্য প্রগতিশীল সংগঠনের পক্ষ থেকে এই যৌথ বিবৃতি এল।
প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, “মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমির আয়োজনে ২২ ও ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলে স্থানীয় কতিপয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর মেলা আয়োজনে বাধা দানের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন মেলা আয়োজনের অনুমতি না দিয়ে অসাধু সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে আপস করে। বিগত ১০ বছর ধরে পালন করে আসা এ মেলায় কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধু ও লালন ভক্তরা অংশ নেন।
'সব পুড়িয়ে ফেলার' হুমকি, পণ্ড হল লালনমেলার আয়োজন
“বহু ধর্ম বহু মত-পথ এবং বহু জাতিগোষ্ঠীর সম্মিলনে গড়ে উঠেছে আমাদের সংস্কৃতি। লালন মেলা বন্ধকে আমরা আমাদের সংস্কৃতির ওপর আঘাত ও ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করি। ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে বহু মত-পথকে, বহুত্ববাদকে ধারণ করে বৈষম্যে বিরুদ্ধে যে প্রত্যয় ঘোষিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনের এই অবস্থান তার বিরুদ্ধে। আমরা প্রশাসনের এই ন্যাক্কারজনক ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানাই।”
বিবৃতি দেওয়া সংগঠনগুলো হচ্ছে- নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটি, যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি জেলা কমিটি, বাসদ জেলা কমিটি, গণসংহতি আন্দোলন জেলা কমিটি, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা কমিটি, ন্যাপ জেলা কমিটি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা কমিটি, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি, ধাবমান সাহিত্য আন্দোলন, প্রগতি সাহিত্য পরিষদ, প্রগতি লেখক সংঘ, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জেলা জমিটি, খেলাঘর জেলা কমিটি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, সমমনা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়ন, চারণ সাঙস্কৃতিক কেন্দ্র, উন্মেষ সাংস্কৃতিক সংসদ, এই বাংলায়, হাওয়াইয়ান গিটার পরিষদ, কথন আবৃত্তি সংগঠন, কণ্ঠমালা আবৃত্তি সংসদ, অর্চনা একাডেমি, ষড়জ সাংস্কৃতিক অঙ্গণ, ঐকিক থিয়েটার, উঠান থিয়েটার, সমাজ অনুশিলন কেন্দ্র, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ ইত্যাদি।