খাল সংস্কার না করায় নতুন আতঙ্কে ভবদহবাসী

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় আমডাঙ্গা খালটি সংস্কার না করায় জলাবদ্ধ ভবদহ নিয়ে নতুন করে আতঙ্কে পড়েছে এলাকাবাসী।

শিকদার খালিদ যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2022, 03:30 PM
Updated : 6 July 2022, 03:41 PM

গত বছর এলাকাবাসী অপরিকল্পিতভাবে খাল খনন করায় এবার তাদের বর্ষা মৌসুমে ডুবে যওয়ার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

জেলার নওয়াপাড়ার সাবেক মেয়র এনামুল হক বাবুল বলেন, অভয়নগর উপজেলার ঝিকরার বিলের রাজাপুর খাল থেকে আমডাঙ্গা খালের উৎপত্তি। সেখান থেকে যশোর-খুলনা মহাসড়কের মহাকাল আমডাঙ্গা এলাকার মধ্য দিয়ে ভৈরব নদে গিয়ে মিশেছে।

“২০০৬ সালে ভবদহের নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। সে সময় মৃতপ্রায় খালটি স্বেচ্ছাশ্রমে পুনঃখনন করে জলাবদ্ধ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ড স্লুইস গেট নির্মাণ করে খালের দুই পাড় ব্লক দিয়ে আটকে দেয়। এতে স্বস্তি ফেরে। জলাবদ্ধতা কমে যায়।”

এনামুল হক বাবুল ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরস সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ও নওয়াপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

বাবুল বলেন, “খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় গত বছর জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ স্কেভেটর দিয়ে খনন করে। এ সময় তারা অপরিকল্পিতভাবে খালের দুই পাড়ের ব্লকগুলো উঠিয়ে ফেলে। তারপর থেকে শুরু হয় ভাঙন। খালপাড়ের রাস্তাটি সম্পূর্ণ ভেঙে খালে পড়ে। অন্তত ২৬টি পরিবার ভাঙনের তাদের বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ার আতঙ্কে রয়েছে।

“তাছাড়া আগামী বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় আতঙ্কে পড়েছে এলাকাবাসী।”

খালের ছয়টি স্লুইস গেটের সব অচল হয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যেই জলাবদ্ধতা বেড়েছে।

ভাটার সময় এসব স্লুইচ গেট খুলে রাখা এবং জোয়ারের সময় বন্ধ রাখার কথা। জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

স্লুইচ গেট অপারেটর রাজু আহমেদের বলেন, গত ছয় মাস ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাকে বেতন দেয় না। চাকরি স্থায়ীকরণের কথা বললেও তা করেনি। তাই তিনি আর দেখভাল করছেন না।

কয়েক দিন আগে সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিলসহ কয়েকজন গেট খোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু মরচে ধারার কারণে তারা ব্যর্থ হন।

চেয়ারম্যান বিকাশ বলেন, খাল ও স্লুইচ গেট ঠিক থাকলে পানি কমে যায়। ভবদহ অঞ্চলের বিলগুলোয় মাছের পুকুরের পাড় জেগে ওঠে। পুকুর থেকে মাছ পাওয়া যায়। কিন্তু পানি না সরায় মাছ ধরতে পারছেন না চাষিরা। স্লুইচ গেট অচল হয়ে পড়ায় এবার বোরো আবাদ হয়নি প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে।

“পাউবোর উদাসীনতায় আমাদের ভুগতে হচ্ছে।”

এসব বিষয়ে যশোর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, “খাল সংস্কারের প্রকল্পটি এখনও অনুমোদন হয়নি। অনুমোদন হলে কাজ শুরু করা হবে।”

স্লুইচ গেট বন্ধ রাখার কারণ বলতে পারেননি তিনি।