কয়েক দিন ধরে পানি নামতে শুরু করলেও মানুষ এখনও চরম সংকটে রয়েছে খাদ্য-পানীয় এবং বাসস্থান নিয়ে। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সমাজের বিত্তবান লোকজন।
এসব কার্যক্রমে যোগ দিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থীদের স্বেচছাসেবী সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো সাধ্যমত চেষ্টা করছে ভানবাসিদের পাশে দাঁড়াতে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জায়েদা শারমিন বলেন, শিক্ষকদের একদিনের বেতন বন্যার্তদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেতন ছাড়াও যে-কেউ যেকোনো পরিমাণ অর্থ সাহায্য দিতে পারবেন।
“ইতোমধ্যে আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্ট নম্বর সাহায্যের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। শাবি শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে দেশ ও দেশের বাইরে থেকেও আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে বন্যার্তদের পাশ থাকার সুযোগ থাকছে।”
সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মখলিছুর রহমান বলেন, শুক্রবার দুপুরে সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ইছাকল, পোটামারা ও বরির ডর গ্রামের ১৩০০ মানুষকে খাবার দিয়েছেন তারা।
“১৩০০ মানুষকে রান্না করা খাবার আর ২৫০ পরিবারকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের টাকাও বিতরণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে বিশ্ববিদ্যালয় স্বেচছাসেবী শিক্ষার্থীদের সংগঠন।
সংগঠনটির সেক্রেটারি অব ওয়েব মো. সালমান আসাদ্দু বলেন, তারা প্রায় ১১০০ পরিবারকে ত্রাণ দিয়েছেন। প্রতি পরিবারকে চিঁড়া তিন কেজি, গুড় আধা কেজি, লবণ আধা কেজি, বিস্কুট আধা কেজি, স্যালাইন পাঁচটি, মোমবাতি আর দেয়াশলাই পাঁচটি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট পাঁচটি করে দেওয়া হয়েছে।
“বিশ্ববিদ্যালয়ের আাশপাশের এলাকায় বন্যাদুর্গত ও কিছু স্কুলশিক্ষার্থীর পরিবারকে এই ত্রাণ দেওয়া হয়।”
সংগঠনের সভাপতি আশরাফুল আলম আকাশ বলেন, সঞ্চালনের পক্ষ থেকে প্রথম ধাপে সিলেটের ছাতক উপজেলায় যেসব স্থানে সরকারি ত্রাণসামগ্রী পৌঁছায়নি সেই চৌকা, রামচন্দ্রপুর ও পরানপুর গ্রামের ১০৪টি পরিবারকে কয়েক দিন চলার মত খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
“ত্রাণসামগ্রী হিসেবে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ এবং লবণ বিতরণ করা হয়। এছাড়া দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার স্যালাইন, স্যানিটারি পণ্য, মোমবাতি ও দেয়াশলাই।"
তাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলে জানান এই স্বেচ্ছাসেবক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্নোত্থান। সংগঠনটি পাঁচ ধাপে বানভাসিদের ত্রাণ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ধীমান ধীব্য।
“ওই সব এলাকার ৪৯৭টি পরিবারকে দুই হাজর ৪১ জন বন্যাদুর্গতকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।”
ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলে জানান ধীব্য।
বন্যার্তদের পাশে আছে বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি প্লাটুন।
সংগঠনের ক্যাপ্টেন মো. আশ্রাফুল করিম বলেন, তারা তিনশ প্যাকেট রান্না করা খাবার আর বিশুদ্ধ পানি বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করেছেন। বুধবার সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে এই কর্মসূচির পালন করেন তারা।।
“মানুষের দুর্দিনে সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে পাশে আছি। সাধ্যমত আবারও ত্রাণ দেব আমরা।”
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সাবেক পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনায় তারা বন্যার শুরু থেকে মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। ৫০০ মানুষকে রান্না করা খাবার ও সুপেয় পানি বিতরণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়া হছে।
সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই নেতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ত্রাণ দিয়েছেন।