তাছাড়া পুলিশ ধর্ষণ মামলার বদলে ধর্ষণচেষ্টার মামলা নথিবদ্ধ করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন নান্দাইলের শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের এই ছাত্রী।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম ফকির ফয়সাল গলায় ছুরি ধরে ধর্ষণ করেন বলে কিশোরীর অভিযোগ।
‘ধর্ষণের সময়’ কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকেও ফয়সাল ছুরি দেখান বলে রহিম অভিযোগ করেছেন।
কিশোরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্প্রতি ফয়সালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ফয়সালের স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। কিশোরী কলেজে যাওয়া-আসার সময় ফয়সাল তার খোঁজখবর নিতেন।
“শুক্রবার উপবৃত্তির ফাইলে স্বাক্ষর দেওয়ার কথা বলে ফয়সাল আমাকে কলেজে ডেকে নেন। কলেজে গেলে ফয়সাল আমাকে মুখ চেপে গলায় চাকু ধরে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও করে রাখেন। এতে সহযোগিতা করেন তার সহযোগী আলামিন ও অজ্ঞাত আরও একজন। মাটিতে ফেলে আলামিন আমার পা ধরে রাখে। ঘটনা কাউকে বললে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন ফয়সাল। ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে আমার পরিবার।”
বাড়ি ফিরে সবাইকে বলার পর কিশোরী পুলিশে অভিযোগ দিতে যান।
কিশোরীর বক্তব্য, “ওসি স্যারকে সবকিছু খুলে বলার পর তারা ‘ধর্ষণ’ মামলার বদলে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলা নিয়েছে। পুলিশ আমাদের সঙ্গে অবিচার করেছে। তারা এটা কেন করেছে বুঝতে পারছি না “
কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম নিজেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে বলেন, “মেয়েটা কলেজে ঢোকার পর ফয়সাল তাকে জড়িয়ে ধরে। আমি কাছে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ফয়সাল আমাকে চাকু দেখালে আমি বাইরে বের হয়ে অধ্যক্ষ স্যারকে ফোন করি। অধ্যক্ষ স্যার তাদের বাইরে বের করে দিতে বলেন।”
কলেজের অধ্যক্ষ বাদলকুমার দত্ত পিয়নের কাছে ঘটনা শুনেছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, “ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ফয়সাল মাঝেমধ্যে কলেজে আসত কোনো কাজ থাকলে। তার সঙ্গে কলেজের তেমন কারও সখ্য নেই। সে এমন কাজ করে থাকলে তার বিচার হওয়া উচিত।”
পুলিশ ধর্ষণ মামলা নেয়নি কেন সে বিষয়ে নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, “কিশোরীর বক্তব্য শুনেই ধর্ষণচেষ্টার মামলা নেওয়া হয়েছে।”
মামলা য় ফয়সাল ও অজ্ঞাত দুইজনকে আসামি করা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, তাদের মধ্যে ফয়সালকে বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত হছে।
জেলার পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান বলেন, “নিয়ম হচ্ছে ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী মামলা নেওয়া। যদি পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”