মেঘনায় নৌপুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, জেলে নিহত

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার সময় নৌপুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির মধ্যে এক জেলে নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন চার পুলিশ সদস্য।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকলক্ষ্মীপুর ও চাঁদুপর প্রতিনিধি এবং বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2022, 11:13 AM
Updated : 10 April 2022, 11:13 AM

রোববার ভোর রাতে উপজেলার মজু চৌধুরীর হাট এলাকার মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে বলে নৌপুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) কামরুজ্জামান জানান। 

তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১০ জেলেকে আটক করা হয়েছে। আহতদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নিহত আমীর হোসেন ভোলা সদর উপজেলার কুতুবপুরা মতলব বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন।

জাটকা সংরক্ষণে মেঘনায় দুই মাস মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার কথা তুলে ধরে এসপি কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে রোববার রাতে নৌপুলিশ নদীতে অভিযানে নামে।

“ভোররাতে টহল পুলিশ একটি জেলে নৌকা থেকে কিছু জাটকা জব্ধ করে। তখন ওই জেলেরা আশপাশে থাকা আরও জেলেদের খবর দেয়। কিছুক্ষণ পর সেখানে ছয় থেকে সাতটি নৌকায় জেলেরা এসে পুলিশকে ঘিরে ফেলে।

এসপি বলেন, “জেলেরা অন্ধকারের মধ্যে অতর্কিতে হামলা চালায় এবং পুলিশের ওপর ইট, জালের কাঠি নিক্ষেপ করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নৌ পুলিশ তিনটি গুলি করে। জেলেদের হামলায় চার পুলিশ সদস্যসহ পাঁচ জন আহত হয়।”

আহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য জহিরুল ইসলাম, মহসীন, আনোয়ার, মোবারক ও স্পিডবোট চালক রয়েছেন।

আহতদের প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। জেলে আমীরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সকালে তিনি সেখানে মারা যান।

এসপি বলেন, “আমীর কীভাবে মারা গেছেন তা এখনি বলা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি সংঘর্ষে নাকি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরই বলা যাবে।”

এ ঘটনায় আটক ১০ জনকে মামলা দিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান নৌপুলিশের এই কর্মকর্তা। 

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমির হোসেনকে হাসপাতালের ভর্তির সময় তার কান দিয়ে রক্ত পড়ছিল এবং মাথা ফোলা ছিল। অবস্থা গুরুতর থাকায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়। সেখানেই তিনি মারা গেছেন।“

“কী কারণে মারা গেছেন ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। লাশ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে আছে।”

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, “জেলেদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় নৌপুলিশ ১০ জনকে আটক করে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় পাঠিয়েছে।” 

নৌপুলিশের সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সাথী রানী শর্মা দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “জাটকা ধরা বন্ধে অভিযান চলছে। নৌপুলিশ সেখানে অভিযানে গিয়েছিল। তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় পুলিশের ওপর। তখন নিরূপায় হয়ে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলে আমি প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। রিপোর্ট এসে পৌঁছালে বিস্তারিত বলতে পারব।”