কুষ্টিয়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সোহেল রানা আশার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন ওই ওয়ার্ডের লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম।
প্রধান শিক্ষক বলেন, কাউন্সিলর সোহেল রানা আশা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের মাঠে ইট-বালু-খোয়া-পাথরসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী রাখছেন। এতে শিক্ষার্থীরা স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারছে না; খেলাধুলা করতে পারছে না।
কিন্তু কাউন্সিলর কর্ণপাত করেননি বলে প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ।
প্রধান শিক্ষক বলেন, “বৃহস্পতিবার সকালে আবারও বিদ্যালয়ের গেটে ক্রাশার মেশিন চালু করলে সেটি বন্ধ করতে বলেছি। এরপর কাউন্সিলর সাহেব আমার ওপর হামলা চালান। আমি কার্যালয়ে কাজ করার সময় কাউন্সিলর আমার কক্ষে প্রবেশ করে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে প্রহার শুরু করেন। অন্য শিক্ষকরা আমাকে রক্ষা করতে গেলে তাদেরও কাউন্সিল বেধড়ক মারধর করেন।”
প্রধান শিক্ষকের আরও অভিযোগ, “এসব নিয়ে বেশি বাড়াবড়ি করলে কাউন্সিলর আমার প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান। আমি এখন চরম ভীতসন্ত্রস্ত। বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি কুষ্টিয়া মডেল থানায়। আমি বিচার চাই।”
ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের কাছে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ি সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান। তারা কাউন্সিলরের বিচার দাবি করেন।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জায়েদুর রহমান বিদ্যালয় পরিদর্শন করে বলেন, “ইদানীং স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের কতিপয় ব্যক্তি দ্বারা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের লঞ্ছনার বেশি কিছু ঘটনা ঘটেছে। একজন জনপ্রতিনিধি প্রধান শিক্ষককে প্রহার করবেন এটা কোনোভাবেই তুচ্ছ করে দেখার সুযোগ নেই।
“প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামকে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। তাছাড়া শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়য়ে কাউন্সিলর সোহেল রানা আশার সঙ্গে কথা বলতে তার বাড়িতে ও পৌরসভা কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি। মেবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়েও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কুষ্টিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক সাব্বিরুল আলম বলেন, “প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। প্রধান শিক্ষকের লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে আমলে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেই সঙ্গে স্কুলমাঠ থেকে সব নির্মাণসামগ্রী দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার জন্যও বলেছি।”