বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-পরিচালক বাবুলাল বৈদ্য বাদী হয়ে সোমবার বিকেলে মামলাটি করেন বলে বন্দর থানায় ওসি দীপক চন্দ্র সাহা জানান।
মামলার আসামিরা হলেন: রূপসী-৯ জাহাজের মাস্টার রমজান আলী শেখ, নুরুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম, নাদিম হোসেন, লস্কর সুমন হোসেন, ইয়াসিন, সুকানি জাহিদুল ইসলাম ও গ্রিজার রিয়াদ হোসেন।
রোববার দুপুর ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদরের সৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন মালবাহী জাহাজ রূপসী-৯ পেছন থেকে চাপা দিলে ডুবে যায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসার উদ্দিন।
পালিয়ে যাওয়া জাহাজটিকে বিকালেই মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার একটি ডকইয়ার্ড থেকে জব্দ এবং কর্মীদের আটক করে নৌ পুলিশ।
সোমবার সকালে লঞ্চটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরই মধ্যে আটটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে চারজন। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ কর্মীরা উদ্ধারকাজে অংশ নেন। লাশের খোঁজে তল্লাশি এখনও চলছে।
মামলার বাদী বলেন, “মামলায় আসামিদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।”
এ ব্যাপারে মতিঝিলের নৌ আদালতে আরেকটি মামলা হবে বলে জানান তিনি।
বন্দর থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ মহসিন গণমাধ্যমকে বলেন, “মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বেপরোয়া গতিতে জাহাজ চালিয়ে নরহত্যা, জখম, গুরুতর জখমসহ ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে। মামলার আসামিদের নৌ পুলিশের হেফাজতে আদালতে পাঠানো হবে।”
নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। মামলাটির তদন্ত করছে নৌ পুলিশ।”
রূপসী-৯ এর চাপে এমএল আফসার উদ্দিন লঞ্চটি যখন তলিয়ে যাচ্ছিল, কাছের আরেকটি লঞ্চ থেকে সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেন রাকিব আল রাজু নামে একজন। তিনি ওই ভিডিও ফেইসবুকে দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
রাকিব আল রাজু পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লঞ্চটি চাপা পড়ার পরও জাহাজের গতি কমাননি চালক।
কয়েক ঘণ্টা পর মুন্সীগঞ্জের হোসেনদি এলাকা থেকে রূপসী-৯ এবং এর মাস্টারকে আটক করে নৌ-পুলিশ।
তবে সোমবার সকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে নৌ পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান জানান।
জরুরি যোগাযোগে ‘হটলাইন’
লঞ্চডুবির ঘটনায় জরুরি যোগাযোগের জন্য বিআইডব্লিউটিএ একটি ‘হটলাইন’ খুলেছে; যারা নম্বর-১৬১১৩।
বিআইডব্লিউটিএর এর উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের ষষ্ঠ তলায় ৬১৭ নম্বর কক্ষে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে এই হটলাইন চালু করা হয়েছে।
এছাড়া আরও দুটি টেলিফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হল- +৮৮০২২২৩৩৫২৩০৬; মোবাইল- +৮৮০১৯৫৮৬৫৮২১৩।
মিজানুর বলেন, এই লঞ্চ দুর্ঘটনা সংক্রান্ত যে কোনো তথ্যের জন্য এই হটলাইন যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: