প্রসূতির অস্ত্রোপচারের সময় নবজাতকের কপালে পোঁচ, ৮ সেলাই

ফরিদপুরে এক বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ করাতে গিয়ে ছুরির পোঁচে নবজাতকের কপাল কেটে গেছে; তাকে বাঁচাতে দিতে হয়েছে আটটা সেলাই।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2022, 03:53 PM
Updated : 15 Jan 2022, 05:21 PM

শনিবার সকালের এ ঘটনায় ফরিদপুর শহরের আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুল আলম জানিয়েছেন।

আহত নবজাতকের বাবা রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার মইজুদ্দিন মাতব্বর পাড়ার শফিক খান।

শফিকের বোন হোসনে আরা বলেন, প্রসূতি রুপাকে শনিবার ভোরে তারা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে দালালদের উস্কানিতে পাশের আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

“আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই সকাল ৮টার দিকে সেখানকার নার্স চায়না বেগম ও দুইজন আয়া প্রসূতির অস্ত্রোপচার করেন। পরে বুঝতে পারি সেখানে কোনো চিকিৎসক নেই। নার্স আর আয়া প্রসূতির পেট থেকে বাচ্চা বের করতে গিয়ে কপাল কেটে ফেলে। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে নয়টি সেলাই দেয় নবজাতকের কপালে।”

তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

খবর পেয়ে সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. মাসুদুল আলম, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাতেমা করিম ও সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন কর হাসপাতালে যান।

ফাতেমা করিম বলেন, “অস্ত্রোপচারের ছুরিতে নবজাতকের কপালে পোঁচ লেগেছে। সেখানে আটটা-নয়টা সেলাই দিতে হয়েছে, যা কল্পনার অতিরিক্ত। একে কী বলব। এটা মেনে নেওয়া হবে না।”

প্রসূতির চিকিৎসা বিষয়ে তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে মনিটরিং জোরদার করা হবে।

তাছাড়া ইতোমধ্যেই বেসরকারি এই হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং লাইসেন্স বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ছিদ্দিকুর রহমান।

ঘটনার পর পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।

আটক দুইজন হলেন হাসপাতালের নার্স চায়না বেগম ও পরিচালক মো. পলাশ মোল্লা। তাছাড়া এক দালালকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ কর্মকর্তা সুমন রঞ্জন কর বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। তাদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।