কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু: মরদেহ তুলে ময়নাতদন্ত করা হবে

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হবে।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2021, 03:37 PM
Updated : 14 Dec 2021, 03:37 PM

বুধবার সকালে কুষ্টিয়ার বাড়ির কবর থেকে এই শিক্ষকের মরদেহ উত্তোলন করা হবে বলে খুলনার খানজাহান আলী থানার ওসি প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন।

গত ৩০ নভেম্বর কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী দেখা করে আসার পর ক্যাম্পাসের কাছে ভাড়া বাসায় ফিরে মারা যান কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ও লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সেলিম (৩৮)।

১ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত ছাড়া তার মরদেহ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামে দাফন করা হয়।

ওসি প্রবীর বলেন, কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় গত ৪ ডিসেম্বর থানায় একটি জিডি করা হয়। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনে ৫ ডিসেম্বর খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। জেলা প্রশাসক ১৩ ডিসেম্বর লাশ উত্তোলনের অনুমতি দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার খানজাহান আলী থানা পুলিশের একটি টিম কুষ্টিয়ায় গেছে জানিয়ে ওসি বলেন, মঙ্গলবার বিকালে মরদেহ উত্তোলন করার কথা থাকলেও দিনের আলো ফুরিয়ে যাওয়ায় তা হয়নি। বুধবার সকালে মরদেহ উত্তোলন এবং এরপর ময়নাতদন্ত হবে।

অভিযোগ উঠেছে, সেজানসহ একদল শিক্ষার্থী অধ্যাপক সেলিমকে লাঞ্ছিত করেছিলেন, যা তাকে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং অধ্যাপক সেলিমের পরিবার এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করলেও সেজান এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ৪ ডিসেম্বর সেজানসহ নয় শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।

অধ্যাপক সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। শিশু কন্যাকে নিয়ে কোথায় যাবেন, কী করবেন তা নিয়ে চিন্তিত। তিনি চান কুয়েট কর্তৃপক্ষ মামলা করুক। বিষয়টি ইতোমধ্যে তিনি শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে কুয়েট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

তবে কুয়েটের জনসংযোগ ও তথ্য শাখার মুখপাত্র রবিউল ইসলাম সোহাগ মঙ্গলবার বলেন, মামলার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় গত ৩ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমাদ জানান, সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও হলগুলো ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা তদন্ত সম্পন্ন করতে পারেননি। সে কারণে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তারা আরও ১০ দিন ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার সুপারিশ করেন।

“এর প্রেক্ষিতে ১২ ডিসেম্বর রাতে সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাস ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।”

তবে আগামী ২৩ ডিসেম্বরের আগেই তারা তদন্ত সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।