মাদারীপুরে নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে ভোট প্রার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2021, 05:10 PM
Updated : 10 Dec 2021, 05:10 PM

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

উমেদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার মুন্সী বলেন, “এই নির্বাচন কর্মকর্তার ঘুষবাণিজ্যর কারণে শিবচরের নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনতিবিলম্বে তাকে অপসারণ করা না হলে তিনি বিভিন্ন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন।

“এতে যদি নির্বাচনকালে জানমালের কোনো ক্ষতি হয় তাহলে নির্বাচন কর্মকর্তা তা এড়িয়ে যেতে পারবেন না।”

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ মুন্সী উমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আরেকজন চেয়ারম্যান প্রার্থী।

তিনি বলেন, “করণিক ভুলত্রুটিসহ বিভিন্ন ধরনের অজুহাতে প্রার্থিতা বাতিলের হুমকি দেন এই নির্বাচন কর্মকর্তা। এভাবে ভয় দেখিয়ে ঘুষ নেন।”

লিখিত একটি অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি হারুন-অর-রশিদ শিবচর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। প্রতিটি নির্বাচনের সময় তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ ওঠে। শিবচরে চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনেও বিভিন্ন প্রার্থীর কাছ থেকে মনোনয়নপত্রে ভুলত্রুটি দেখিয়ে অর্থ আদায় করছেন।

সন্নাসীরচর ইউনিয়নের চশমা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম তারেক বলেন, “আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছেন। এছাড়া আমি অফিসের স্টাফদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য কিছু টাকা দিয়েছি। এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।”

ভদ্রাসন ইউনিয়নের আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রউফ শিকদার বলেন, “আমার কাছ থেকে ভোটার তালিকার সিডি বাবদ ৫০০ টাকা নিয়েছেন এই নির্বাচন কর্মকর্তা।”

সন্নাসীরচর ইউনিয়নের ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রউফ হাওলাদার বলেন, “শিবচর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টুকটাক কিছু অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে আপনাকে আমি পরে ফোন দেব। পরে কথা বলব।”

তবে নির্বাচন কর্মকর্তা হারুণ-অর-রশিদ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এসব মিথ্যা অভিযোগ। আমি কাউকে ভয়ভীতি দেখাইনি। আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা নিইনি।”

অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মাদারীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান ও মাদারীপুরের ডিসি রহিমা খাতুন।

মনিরুজ্জামান বলেন, “শিবচর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুণ-অর-রশিদের বিরুদ্ধে ঘুষবাণিজ্য করার অভিযোগ পেয়েছি। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। তার বিরুদ্ধে প্রার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিষয়টি আমলে নিয়ে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিসি রহিমা খাতুন।

চতুর্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর শিবচরের তিন ইউনিয়নে এবং ৫ জানুয়ারি দুই ইউনিয়নে নির্বাচন হবে।