সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (সদর) আয়েশা বেগমের আদালতে মামলার আবেদন করেন সেই যুবকের মা রেজিয়া বেগম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেল সুপার মো. ইকবাল হোসেন, সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে এই এজহার জমা দেওয়া হয়েছে।
এজহারভুক্ত বাকি আসামিরা হলেন, জেলা কারাগারের জেলার দিদারুল আলম, ডেপুটি জেলার রেজাউল করিম, সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) সোহরাব আল হোসাইন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাবুল মিয়া এবং সুজন কুমার চক্রবর্তী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের দুর্বাজ মিয়ার ছেলে হাফিজ ভূইয়া (২৫) এক মামলায় জামিন পাওয়ার পর ‘টাকার দাবিতে’ তাকে কারাগার থেকে থানায় এনে ফের অন্য মামলায় জড়ানো হয়েছে।
এ ঘটনায় আসামি করায় বিস্ময় প্রকাশ করে জেলা কারাগারের সুপার মো. ইকবাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, কারাগারে থাকা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিনিয়ত পুলিশ আসে। তবে কারাগারের সীমানা প্রচীরের ভেতর থেকে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করার নিয়ম নেই।
তবে আদালতে এজহারের বিষয়টি অবগত জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিক্তি পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, “হাফিজকে প্রথমে ডাকাতির প্রস্তুতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে এলাকায় চিহ্নিত ডাকাত। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলাও রয়েছে।
“পরবর্তীতে জামিন পাওয়ার পর তাকে অন্য জায়গা থেকে ছিনতাইয়ের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।”
এদিকে, রেজিয়া বেগমের এজহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুন হাফিজ ভূইয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্যপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করে সদর মডেল থানা পুলিশ।
গত ১৫ জুলাই আদালত থেকে হাফিজকে জামিন দিয়ে ওইদিনই কারাগারে সব কাগজপত্র পাঠানো হয়। তবে সেদিন রাত পর্যন্ত কারাগার থেকে বের করা হয়নি হাফিজকে।
জামিনের বিষয়টি জানতে পেরে পরদিন সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) সোহরাব, এসআই বাবুল এবং সুজন কারাগারে গিয়ে জেল সুপার ইকবাল, জেলার দিদারুল, ডেপুটি জেলার রেজাউলের সাথে যোগসাজশে হাফিজকে তুলে সদর থানায় নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
হাফিজকে থানায় নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তার মা রেজিয়া ও ভগ্নিপতি মন মিয়া সেখানে যান। সেখানে পরিদর্শক (অপারেশন্স) সোহরাব হাফিজকে ছাড়াতে ‘মোটা অংকের টাকা দাবি করেন’। এছাড়া টাকা না দিলে হাফিজকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার ভয় দেখান বলেও এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ নিয়ে ‘দেন-দরবারের মধ্যে’ এক মাস আগের অপর এক মামলায় হাফিজকে আসামি করে আদালতে চালান দেওয়া হয়।
বাদী রেজিয়া বেগমের আইনজীবী নিজাম উদ্দিন খান সাংবাদিকদের জানান, এজহারটি গ্রহণ করে এ বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন আদালত।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।