মঙ্গলবার উপজেলার কুরমা বনবিটে এই ঘটনা ঘটে বলে খাসিয়া পুঞ্জির লোকজনের ভাষ্য।
কুরমা পানপুঞ্জির রিয়াং খংলার ছেলে ফরমি সুচিয়াংকে (২৮) কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বনের গাছ ছাঁটিয়ে দেওয়ায় ফরমি সুচিয়াংকে ‘শাসন’ করা হয়েছে বলে রাজকান্দি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানিয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফরমি সুচিয়াং সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১টায় রাজকান্দি বনরেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে কুরমা বনবিটের নবনিযুক্ত এক বিট কর্মকর্তাসহ কয়েকজন বনকর্মী পান জুমে প্রবেশ করেন।
করোনাভাইরাস সংমণের মধ্যে পানজুম এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না বলে ফরমি সুচিয়াং তাদের প্রবেশের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে জানান।
সুচিয়াং বলেন, এই কারণে বনের একজন পেট্রল গার্ড, একজন নিরাপত্তা প্রহরী ও এক বনবিট কর্মকর্তাসহ ৪/৫ জন মিলে তাকে ধরে নিয়ে লাঠি দিয়ে পেটায়। পরে আবার তার হা-পা বেঁধে কুরমা বনবিটের একটি কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করে।
ঘটনাটি দেখে দুটি শিশু কুরমা খাসিয়া পুঞ্জিতে খবর দিলে তার মামা ডালিম সুচিয়াং ও পুঞ্জির সহকারী হেডম্যান মান্রী ছারলেস সঙ গিয়ে মুচলেখায় স্বাক্ষর করে তাকে ছাড়িয়ে আনেন, বলেন ফরমি সুচিয়াং।
পুঞ্জির বাসিন্দারা জানান, তাকে পুঞ্জিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে বুধবার সকালে তাকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
কুরমা খাসিয়া পুঞ্জির সহকারী হেডম্যান মান্রী ছারলেস সঙ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা বনের জমিতে ‘ফরেস্ট ভিলেজার’ হিসেবে বসবাস করে পান চাষ করেন। তাদের যুবক যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে তার বিচার করা যেত।
“এভাবে বনে প্রথম দফা মারপিট করে আবার বনবিটে নিয়ে একটি কক্ষে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনে আমরা মর্মাহত।”
ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, “এভাবে কাউকে মারপিট করা ঠিক হয়নি।”
খাসিয়া হেডম্যানদের সংগঠন খাসি স্যোশাল কাউন্সিল সভাপতি মাগুরছড়া পুঞ্জির হেডম্যান জিডিসন প্রধান সুচিয়াং বলেন, “এভাবে কাউকে হাত-পা বেঁধে মারধর করা ঠিক হয়নি।”
তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করেন।
রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, “যুবকটি বনের গাছগাছালি ছাঁটাই করছিল। এজন্য তাকে শাসন করা হয়েছে।”