শরীয়তপুরে এক আসামিকে মুক্তি দিয়ে বেকায়দায় কারা কর্মকর্তারা

এক চুরি মামলায় জামিন পাওয়ার পর একাধিক মামলার আসামিকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে কারা কর্মকর্তারা।

শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2021, 01:09 PM
Updated : 6 April 2021, 01:09 PM

এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে বরিশাল বিভাগীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া মো. ইব্রাহিম নামের এক কাররক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করাও হয়েছে বলেন কারা কর্মকর্তারা।

এছাড়া গত সোমবার কারা মহাপরিদর্শক শরীয়তপুরের জেলার ও ডেপুটি জেলার কাছে কারা বিধি মোতাবেক লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন।

ঘটনা জানাজানির পর এ নিয়ে পালং মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়।

একাধিক মামলা মাথায় নিয়ে ছাড়া পাওয়া আসামি লিটন ফরাজী বরিশাল জেলার উজিরপুরের আব্দুর রব ফরাজীর ছেলে, তিনি ঢাকার সবুজবাগে বসবাস করেন বলে সাধারণ ডায়রিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শক টিপু সুলতান বলেন, “এ ঘটনায় আমাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একজন কারারক্ষীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।”

শরীয়তপুর কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আমিরুল ইসলাম বলেন, গত রোববার সন্ধ্যায় বিধি মোতাবেক আমি তিনজনকে বন্দিকে মুক্তি দিই।

“পরে জানতে পারি লিটন ফরাজীর নামের এক আসামির বিরুদ্ধে অন্য জায়গায় আরও মামলা রয়েছে।

“বিষয়টি আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল।”

পালং মডেল থানার ওসি আসলাম উদ্দিন জানান, শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলার আমিরুল ইসলাম পালং মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন।

পুলিশ আসামি লিটন ফরাজিকে গ্রেপ্তারের জন্য বরিশালে ও ঢাকার সবুজবাগ থানায় বার্তা দিয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে দুই দিনেও তাকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

শরীয়তপুর আদালত এবং পালং মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, খুলনার দৌলতপুরের একাধিক মামলার আসামি লিটন ফরাজীসহ দৌলতপুরের এক হাউজিং এস্টেটের আনোয়ার হোসেন সিকদারের ছেলে লিটন সিকদার এবং পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার বাশ বুনিয়া গ্রামের আলম মোল্লার ছেলে জসিম মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে শরীয়তপুরের গোসাইর হাট থানা পুলিশ অপর এক চুরির মামলায় তাদেরকে শোন এরেস্ট দেখিয়ে শরীয়তপুর আদালাতে আবেদন করে। আদালত এ আবেদন মুঞ্জুর করে তাদেরকে শরীয়তপুর কারাগারে পাঠায় এবং কারা ফটকে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুমতি দেয়। তখন থেকে তারা শরীয়তপুর কারাগারে বন্দি ছিলেন।

গোসাইর হাট থানার ওসি মোল্লা সোয়েব আলী জানিয়েছেন, গত রোববার আসামিপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাদের তিনজনের জামিন মঞ্জুর করে।

এ প্রেক্ষিতে শরীয়তপুর আদালতের পুলিশ তিনজনের জামিনের জন্য জেলা কারাগারে রিলিজ ওর্ডার পাঠায়।

অন্য দুইজন অন্যান্য মামলায় জামিনে থাকলেও আসামি লিটন ফরাজীর নামে আরও একাধিক মামলা রয়েছে।

তবে সেদিন সন্ধ্যায় শরীয়তপুর জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আমিরুল ইসলাম দুজন আসামিকে জামিননামা দেখে কারাগার থেকে মুক্তি দেন।

কারা কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, সোমবার তারা জানতে পারেন লিটন ফরাজীর বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা রয়েছে।

এরপর পালং মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলার আমিরুল ইসলাম।