প্রায় নয় লাখ পরিবার পেতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর গৃহ উপহার

এক দিন পরই দেশব্যাপী প্রায় নয় লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে বিশেষ উপহার হিসেবে আধা-পাকা বাড়ি দেওয়ার কর্মসূচি উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আল ইমরান শোভন চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2021, 01:20 PM
Updated : 18 Jan 2021, 06:17 PM

চাঁদপুরের ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, আগামী ২০ জানুয়ারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সারাদেশে এসব ঘর প্রদান কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন।

এসব বাড়ি উপহার পাওয়া দেশের আট লাখ ৮২ হাজার ৩৩টি পরিবারের মধ্যে চাঁদপুরের ১১৫টি পরিবার রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশ।

চাঁদপুরে এসব বাড়ির নির্মাণ শেষপর্যায়ে জানিয়ে তিনি বলেন, মানসম্মতভাবে ঘর তৈরি করতে আমরা প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করছি। কয়েক দিনের মধ্যেই প্রতিটি ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতাংশ খাস জমিতে দুইটি আধা পাকা ঘর বিশিষ্ট প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে এক লাখ ৭২ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

সরকার নির্ধারিত একই নকশায় তৈরি এসব বাড়িতে থাকছে রান্নাঘর, টয়লেটসহ অন্যান্য সুবিধা।

চাঁদপুর সদরে ৪০টি, মতলব দক্ষিণে ২৫টি, মতলব উত্তরে ৫টি, কচুয়ায় ১৫টি, শাহরাস্তিতে ৫টি, হাজীগঞ্জে ৫টি এবং হাইমচর উপজেলায় ২০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এ সরকারি বাড়ি পাচ্ছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, গৃহহীনদের জন্য নির্মিত কিছু বাড়ির কাজ শেষ হয়েছে, কযেকটির কাজ চলছে।

সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের বাসিন্দা রেহানা ও পিংকি রানী বলেন, নদী আমাদের সব কেড়ে নিয়েছে। আমাদের মাথা গুজার কোন ঠাঁই ছিল না। পরিবার পরিজন নিয়ে আমাদের অনেক কষ্টে দিন কেটেছে।

“আমাদের যেই আর্থিক অবস্থা, এতে নূন আনতে পান্তা ফুরায়। সেখানে পাকা ঘর তৈরির কথা কল্পণাও করতে পারিনি। কিন্তু আমাদের স্বপ্ন আজ সত্যি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদেকে পাকা ঘর করে দিয়েছে। আমাদের আশ্রয়ের ঠিকানা হয়েছে।”

জেলে, কৃষিকাজ, লবণের মিলে কাজ করাসহ বিভিন্ন কাজ করে আসা বৃদ্ধ দেলোয়ার হোসেন বলেন, “কখনো ভাবিনি পাকা ঘরে থাকার সুযোগ পাব। আগে কর্ম করে খেতে পারতাম। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে হারিয়েছি কর্মক্ষমতাও। এখন আর শরীরে কুলায় না।”

নদী ভাঙনে ঘর-বাড়ি হারিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যের জমিতে কোনো মতে আশ্রয় নিয়েছি পরিবার নিয়ে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে প্রধানমন্ত্রী আমাকে ঘর উপহার দিয়েছেন, তাকে তাকে ধন্যবাদ জানাই।”

লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম খান বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৪০টি ঘর তৈরি হচ্ছে। ঘর তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশাকরি আগামী ২০ জানুয়ারীর আগেই সব নির্মাণ কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন হবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ বলেন, আমাদের উপজেলায় ৪০টি ঘর গৃহহীনদের প্রদান করা হবে।

জমিও নেই, ঘরও নেই এমন ‘ক’ তালিকাভূক্ত গৃহহীনদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব ঘর প্রদান করা হচ্ছে বলেন তিনি।

শুধু গৃহহীনরা নয় চাঁদপুর শহরের বাসিন্দা খোকন সরকার, আবুল কালাম আজাদসহ স্থানীয়রা বলছেন, গৃহহীন এসব মানুষ অনেক কষ্টে তাদের দিন পার করেছেন। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদ্রে পুড়ে তাদের সময় কেটেছে। প্রধানমন্ত্রী অসহায় এসব মানুষের কথা ভেবেছেন। তাদেরকে মাথাগোজার ঠাঁই করে দেওয়ায় আমরা অনেক খুশি হয়েছি।