ইউপি কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের ‘ইয়াবা’ সেবনের অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ে এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কার্যালয়ে বসে ‘ইয়াবা’ সেবনের অভিযোগ উঠেছে।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2020, 10:41 AM
Updated : 16 Dec 2020, 10:41 AM

এই বিষয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও ওই চেয়ারম্যান ‘মাদক’ সেবনের কথা অস্বীকার করেছেন।

বুধবার দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে, ভিডিওটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন বসে আছেন। চেয়ারম্যানের পাশে বসে একজন সবার মধ্যে তাস খেলার কার্ড বিলি করছেন। ওই সময় চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুখে পাইপ নিয়েছেন এবং আরেকজন তাতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন।

ভিডিওটি দেখে লোকজন এটি পাইপের মাধ্যমে ‘ইয়াবা’ সেবন বললেও চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম তা অস্বীকার করছেন।

আব্দুস সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইউপি কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার রুমে আমি বসে রেস্ট করি; কারও সাথে ব্যক্তিগত কথা বলি। সেখানে অনেকের বিয়েও দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি সবসময় মাদকের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণা করি। পাশাপাশি খেলাধুলার আয়োজনসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ কাজের সাথে আমার সম্পৃক্ততা সবসময় থাকে। আমি কোনো মাদক সেবনের সাথে জড়িত নই; আমার প্রতিপক্ষরা এমনটি ছড়াচ্ছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন। এটি প্রমাণ করতে পারলে আমি চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি নেব।”

আব্দুস ছালাম ২০১৬ সালের মে মাসে দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভ করে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর মেয়াদ শেষ হবে ২০২১ সালে।

স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, “চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম প্রায় সময় তার ফেইসবুকে মাদকবিরোধী নানা কথা লেখেন। আর এখন ভিডিওতে দেখছি তিনিই ইউপি কার্যালয়ে বসে জুয়া খেলা ও মাদক সেবন করছেন!”

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ঠাকুরগাঁও জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ এটিকে ‘ইয়াবা’ সেবন বলে জানিয়েছেন।

এক যুবক আব্দুস সালামের মুখের পাইপে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন

আব্দুল লতিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জনপ্রতিনিধিরাই যদি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? এসব মাদকাসক্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জনগণ কী সেবা আশা করতে পারে? ভাইরাল হওয়া ভিডিও যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে এটি দুঃখজনক। অবশ্যই প্রশাসন বিষয়টি দেখবে।”

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহা. যোবায়ের হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি এ বিষয়ে অবগত নই, আপনার মাধ্যমে জানলাম। অবশ্যই বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) নুর কুতুবুল আলম বলেন, “ভিডিওটি আমি দেখেছি। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”

সত্যতা পেলে অন্যান্য মাদকসেবীদের মতো মাদক সংশ্লিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রচলিত আইনে বরখাস্তসহ সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।