এতে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হ্ওয়ায় তিন মাস ধরে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এই দুই উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার ৬ নম্বর চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নের বাজিতপুর, বড়বিলা ও আলালপুর, ৭ নম্বর চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের রশিদপুর এবং তারাকান্দা উপজেলার ১ নম্বর তারাকান্দা ইউনিয়নের পুটামারা গ্রামের রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের রশিদপুরের আকবর আলী বলেন, “প্রভাবশালীরা সরকারি খাল-বিল দখল মাছের ফিসারি গড়ে তুলেছে। যে কারণে বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় বাড়িঘরে পানি উঠেছে।”
রশিদপুরের ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ ও আড়াই কিলোমিটার প্রস্থের বাউশী বিলের পুরোটাই প্রভাবশালীরা দখল করে ফিসারি গড়ে তুলেছেন বলে জানান তিনি।
এছাড়া কাটাখালী খালও প্রভাবশালীদের দখলে জানিয়ে ওই আলীম হোসেন বলেন, “ফিসারির কারণে এ খালের উত্তর-পূর্ব মুখে বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে; ফলে পানি নামতে পারে না। এতে জলাবদ্ধতা হয়ে দুর্ভোগ তৈরি হয়। কাটাখালী ও বাউশীবিল দখলমুক্ত হলেই আমাদের কষ্ট লাগব হবে।”
আলালপুর গ্রামের গৃহিনী হোসনেয়ারা বেগম ও আয়শা খাতুন জানালেন, তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের আত্মীয়র বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন স্বামীকে নিয়ে দিনে একবেলা কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে দিনপার করছেন।রান্না ঘরের চুলাতে পানি; তুলিয়ে গেছে টয়লেটেও। এ অবস্থায় আর পেরে উঠছেন না। সরকার যদি তাদের না দেখে, তাহলে পানিবন্দি হয়ে না খেয়ে মরতে হবে।
স্থানীয় আশরাফ আলী বলেন, “চারপাশে অপরিকল্পিতভাবে মাছের ফিসারি গড়ে তোলার কারণে খাল দিয়ে পানি নামতে পারে না। যার ফলে পুরো গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।রোগ বালাইও দেখা দিয়েছে।”
এসব অভিযোগের বিষয়ে বিষয়ে জানতে চাইলে ফিসারি মালিক সুরুজ মিয়া বলেন, তিন একর জায়গায় তিনি মাছ চাষ করছেন; এর কারলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়নি।
তাহলে জলাবদ্ধতার কারণ জানতে চাইলে এর কোনো উত্তর দিতে পারেন নি তিনি।
আরেক ফিসারি মালিক বাবুল মিয়া বলেন, “ফিসারির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, এই কথাটা ঠিক না। কাটাখালী খাল যদি খনন করা হয় তাহলে গ্রামবাসীর এই কষ্ট থাকবে না।”
সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে ৭ নম্বর চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুকুল ইসলাম রতন বলেন, “সদর ও তারাকান্দা উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ জলাবদ্ধতার কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।”
গ্রামবাসীর দুর্ভোগের খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাগবে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ৬ নম্বর চর ঈশ্বরদিয়ার বাজিতপুর, বড়বিলা ও আলালপুর, ৭ নম্বর চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের রশিদপুর গ্রাম গুলো পরিদর্শন করেছেন। যত দ্রুত সম্ভব খাল গুলো উদ্ধার বা খনন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।
সরকারি খাল-বিল (খাসজমি) দখল করে যারা ফিসারি তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যে বা যারাই খাল-বিল দখল করে ফিসারি তৈরি করেছে তাদের চিহ্নিত করে নোটিশ দিয়ে খাস জমি উদ্ধার করা হবে। কেউ যদি স্বেচ্ছায় খাস জমি ছেড়ে না যায় তাহলে বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।