গত ৯ এপ্রিল দেবিদ্বার উপজেলার বেতরা গ্রামের এ ঘটনায় রোববার এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। ওই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী আদেশে স্বাক্ষর করেন।
রোববার রাতে চিঠিটি হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর।
বরখাস্ত ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম রাজামেহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন।
“পরে সালিশে বিচারের নামে ওই শিক্ষককে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন চেয়ারম্যান। ঘটনার একদিন পর স্থানীয়রা আজিজুরকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের নির্দেশে এক সপ্তাহ পর গত ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় দেবিদ্বার থানায় মামলা করেন আহত ওই শিক্ষক।”
তিনি বলেন, “এছাড়া আরেকটি ঘটনায় একই ইউনিয়নের উখাড়ী গ্রামের ওয়ালি উল্লাহর স্ত্রী কাজল বেগম ও তার শিশু ছেলে শরীফকে একটি মিথ্যা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৩ এপ্রিল একই চেয়ারম্যান পিটিয়ে আহত করেন। এ ঘটনায় আহত কাজল বেগম বাদী হয়ে গত ১৯ এপ্রিল চেয়ারম্যান ছাড়াও তার ভাতিজা শামীমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।”
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দুটি মামলায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনা নিজ পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল।
এদিকে শিক্ষককে মারধরের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইকতিয়ার জানান, গত ১০ মে ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তারের পর কুমিল্লার সিনিয়র জুডিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে।
দুটি মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। পরে ১২ অগাস্ট দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাকিব হাসানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আইন মোতাবেক চার্জশিটভুক্ত আসামি ওই চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করার প্রস্তাবনা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয় বলে জানান এসআই।
এ বিষয়ে মামলার বাদী শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, “আমি মাদরাসা শিক্ষক। আমার কোন বক্তব্য না শুনেই চেয়ারম্যান আমার মেয়েসহ অন্যান্যদের সামনেই আমাকে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে পুরো শরীর রক্তাক্ত করেছিল। ঘটনার পর এলাকার কিছু লোক এবং সাংবাদিক ছাড়া কেউ আমার পাশে ছিল না। চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে আমি ন্যায় বিচার পেতে যাচ্ছি। আশা করি সে চুড়ান্ত বরখাস্তও হবে।”
এদিকে এ বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।