ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাই-বোনকে গলাকেটে হত্যার ‘দায় স্বীকার’ মামার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গলাকেটে বাড়ির খাটের নিয়ে রেখে দেওয়া সেই দুই শিশু ভাই-বোনকে হত্যার দায় স্বীকার করে তাদের মামা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2020, 07:56 AM
Updated : 27 August 2020, 08:05 AM

জেলার পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাহিদ হোসেনের আদালতে শিশু দুটির মামা বাদল মিয়া (৩০) এ জবানবন্দি দেন।

গত সোমবার রাতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদ গ্রামে বাড়ির খাটের নিচ থেকে কামাল উদ্দিনের ছেলে কামরুল ইসলাম (১০) ও শিফা আক্তারের (১৪) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ঢাকার সবুজবাগ থানা এলাকা থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে বাদল মিয়াকে আটক পুলিশ। বাদল কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার খোদে-দাউদপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে।

জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়, বাহরাইন প্রবাসী বাদল গত মার্চ মাসে দেশে ফেরেন। গ্রামে গোষ্ঠিগত দাঙ্গার একটি মামলায় আসামি হওয়ার কারণে বাঞ্ছারামপুরের ছলিমাবাদ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামে তার বোন হাসিনা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি।

প্রবাসে থাকাকালে দোকান করার জন্য ভগ্নিপতি কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ধার নেন বাদল। এর মধ্যে তিন লাখ টাকা ফেরত দেন আর বাকি ১০ লাখ টাকার জন্য কামালের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল তার। এর জেরে এক সপ্তাহ আগে বাদলকে থাপ্পড় মারেন কামাল। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন বাদল।

গত ২৪ আগস্ট বেলা আড়াইটার দিকে কামালের ছেলে কামরুল তার মামা বাদলের ঘরে যায়। বাদল তখন রুমে উচ্চস্বরে গান বাজাচ্ছিলেন। এ সময় বাদল কামরুলের হাত-পা বেঁধে গলাকেটে তাকে হত্যা করে। পরে মরদেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। এরপর ভাগ্নি শিফা রুম পরিষ্কার করতে গিয়ে ভাইয়ের লাশ দেখে ফেললে তাকেও গলাকেটে হত্যা করে লাশ অন্য একটি ঘরের খাটের নিচে রেখে দেয় বাদল।

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর কামরুলকে না পেয়ে সবাই খোঁজাখুঁজি করার জন্য বাইরে বের হয়। এর কিছুক্ষণ পর শিফাকেও দেখতে না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এরই মধ্যে বাদলকে সঙ্গে নিয়ে বাঞ্ছারামপুর ফেরিঘাট এলাকায় কামরুল ও শিফাকে খুঁজতে যান তাদের বাবা কামাল।পরে বাদল সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় বুধবার নিহতদের বাবা বাদলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি (তদন্ত) রাজু আহমেদকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।